যশোরের চাঁচড়া চেকপোস্ট মোড়ে অবস্থিত ইউনিক ফোর্স লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ফেরত না পাওয়া ভুক্তভোগী সদর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে রাশেদুল ইসলাম টিপু মঙ্গলবার এ মামলা করেছেন। প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দীন হোসাইন আসামিদের প্রতি সমন জারি করেছেন।একইসাথে আগামী পহেলা মার্চ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন। এরআগেও গত ৯ ডিসেম্বর তিনি ইউনিকের চিহ্নিত দু’ প্রতারক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে আদালতে আরও একটি মামলা করেন । রাশেদুলের অভিযোগ, পত্রিকা ও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষের বেকারত্বকে পুঁজি করে ইউনিক ফোর্স চাঁচড়ায় টাকা হাতানোর ব্যবসা শুরু করেছে। অল্পদিনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বেকারদের সর্বস্বান্ত করছেন তারা। এর প্রধান ভূমিকায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চিহ্নিত প্রতারক যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকার আলাউদ্দীন আহম্মেদের ছেলে রিয়াজউদ্দীন আহম্মেদ ও পরিচালক ঝিকরগাছা উপজেলার পুরন্দরপুর গ্রামের রাবিউল ইসলামের ছেলে শরিফুল ইসলাম। ২০১৮ সালের ১১ জুন বিজ্ঞাপন দেখে ইউনিক ফোর্সের অফিসে চাকরির জন্য যান বাদী। এসময় পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকে ওই প্রতিষ্ঠানেরই এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর পদে প্রতিমাসে মোটা বেতনে চাকরির আশ্বাস দেন। এক্ষেত্রে মোটা অংকের জামানত দাবি করেন। তাদের প্রলোভনে পড়ে ২০১৮ সালের ৯ নভেম্বর দু’ লাখ ৫০ হাজার টাকা রিয়াজ উদ্দিন ও শরিফুলের হাতে তুলে দেন। একইসাথে তাকে কোম্পানির প্যাডে এমডি হিসেবে তাকে একটি নিয়োগপত্র দেয়া হয়। কয়েক মাস পরে টিপুকে কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার করার কথা বলে আরও আড়াই লাখ টাকা নেন। যা দু’হাজার টাকার নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে ব্যবসায়িক চুক্তি নামায় নেয়া হয় স্বাক্ষর। এরপর থেকে আসামিরা টিপুর সাথে তালবাহানা করতে থাকে। এক পর্যায়ে বেতন বন্ধ করে দেন। টিপু প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। পাওনা টাকা ফেরত চাইলে আসামিরা নানা ধরনের হুমকি ধামকি দিতে থাকেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার আটশ’ ৬০ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। এদিকে, মঙ্গলবার টিপুু ফের চেক ডিজঅনারের আরও একটি মামলা করেন। মামলায় টিপু উল্লেখ করেছেন, আসামিরা তার কাছ থেকে দু’লাখ টাকা নেন। ওই টাকার অনুকূলে গত ২৪ নভেম্বর আসামিরা বাদীকে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ইউনিক ফোর্সের নামের একটি চেক দেন। ২৯ নভেম্বর তা ব্যাংকে জমা দিলে ডিজঅনার হয়। উল্লেখ্য, এই ইউনিক ফোর্স চাঁচড়া ফাঁড়ির নাকের ডগায় থেকেই প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে।তাদের প্রতারণার বিষয়ে গত ২২ ডিসেম্বর রাতদিন নিউজে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যা নিয়ে তৈরি হয় আলোড়ন। এ বিষয়ে স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী চক্রকে ব্যবহার করছে তাদের অপকর্ম চালানোর জন্য। এর বাইরে এসব প্রতারকের একটি নিজস্ব গ্রুপ রয়েছে, যারা পুলিশ-সাংবাদিকসহ প্রশাসনের কোনো কোনো কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে। এভাবেই প্রকাশ্যে প্রতারণা করে চলেছে চক্রটি। ভুক্তভোগীরা প্রতারকদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বিশেষ প্রতিনিধি







