Saturday, December 6, 2025

কালিগঞ্জে প্রবাসী নারীর ছবি–ভিডিও বিকৃত করে ছড়ানোর অভিযোগ

কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় এক প্রবাসী নারীর ছবি ও ভিডিও বিকৃত করে ফেসবুক ও টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা, ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের হরিখালী গ্রামের মৃত শোকর আলীর স্ত্রী মোছা. লুৎফর নেছা বেগম (৫৮) থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

থানায় দাখিল করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কালিগঞ্জ উপজেলার পানিয়া গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে আব্দুল আলিম (৩৫) এবং তার সহযোগী একই গ্রামের জাহিদ হোসেন (৩০) পরিকল্পিতভাবে বাদিনীর কন্যা হালিমা খাতুন (৩০)-এর বিভিন্ন ছবি সম্পাদনা (এডিট) করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে আসছেন। এসব বিকৃত ও অশ্লীল কনটেন্টে হালিমার শারীরিক অঙ্গভঙ্গিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া তার ছবি বিভিন্ন দেব–দেবীর মূর্তি ও মাদকদ্রব্যের ছবির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে অশালীন কনটেন্ট হিসেবে প্রকাশ করা হচ্ছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, শুধু হালিমা নন—তার তিন বোন, এক ভাই ও অন্যান্য আত্মীয়–স্বজনের ছবিও কেটে বিকৃত করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যসহ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্তরা ‘অচেনা মানুষ’সহ ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে নিয়মিত এসব পোস্ট করছে।

জানা যায়, অভিযুক্ত আব্দুল আলিমের সঙ্গে ভুক্তভোগী হালিমা খাতুন ইসলামি শরিয়ত মতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকেই আলিম স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন—এমন অভিযোগ রয়েছে। প্রায় দেড় বছর আগে নির্যাতনের কারণে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। বর্তমানে হালিমা জীবিকার প্রয়োজনে সৌদি আরবে প্রবাসজীবন কাটাচ্ছেন এবং সেখান থেকেই সন্তানদের লালন–পালন করছেন।

হালিমার মা লুৎফর নেছা বেগম অভিযোগে উল্লেখ করেন, “তালাকের পর থেকেই আলিম প্রতিশোধমূলক আচরণ শুরু করে। সে আমার মেয়ের ছবি বিকৃত করে মান–সম্মান ক্ষুণ্ন করছে। এতে শুধু হালিমা নয়, আমাদের পুরো পরিবারের সামাজিক মর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

সর্বশেষ ১৭ আগস্ট ২০২৫ সকাল ১০টার দিকে ‘অচেনা মানুষ’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে হালিমার বিকৃত ছবি পোস্ট করা হয়, যা পরিবারের সদস্যদের চরম মানসিক চাপে ফেলে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল আলিম ও তার সহযোগী জাহিদ হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাদের দাবি, এসব ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত নন।

কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, “আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর