গাজা যুদ্ধ অবসানে নতুন করে আলোচনার আশার আলো দেখাচ্ছে হামাসের সদ্য অনুমোদিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব। গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের সঙ্গে ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। সোমবার মিসরের সরকারি একটি সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানায়, নতুন এই চুক্তিতে হামাস রাজি হয়েছে গাজায় তাদের হাতে আটক অর্ধেক ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার শর্তে। এর বিনিময়ে ইসরায়েলও কিছু সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।
এক ফেসবুক পোস্টে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা বাসেম নাঈম বলেন, গাজা যুদ্ধ নিয়ে মধ্যস্থতাকারীরা যে নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে আমরা সম্মতি জানিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।
মিসরের সরকারি সূত্র আরও জানায়, যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাবে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ৬০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার বিষয়টি রয়েছে। একইসঙ্গে দুই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসানে একটি সমন্বিত রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে পেতে সহায়ক হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
আরও একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, নতুন প্রস্তাবটি যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের দেওয়া আগের প্রস্তাবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেই প্রস্তাবেও ইসরায়েল সম্মতি জানিয়েছিল।
এদিকে গাজা নগরীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইসরায়েলি পরিকল্পনা নিয়ে দেশটির ভেতরে ও বাইরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। রোববার ইসরায়েলে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। বিশ্লেষকদের মতে, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর এটিই ছিল সবচেয়ে বড় গণবিক্ষোভ।
বিক্ষোভকারীরা শুধু যুদ্ধবিরতির আহ্বানই জানাননি, বরং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় আটক থাকা অবশিষ্ট ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করারও দাবি তুলেছেন। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, ওই জিম্মিদের মধ্যে অন্তত ২৯ জন এখনও জীবিত রয়েছেন।
অন্যদিকে ইসরায়েলের সম্ভাব্য নতুন স্থল অভিযানের আতঙ্কে গাজার পূর্বাঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষ পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে পালিয়ে যাচ্ছেন। তবে নিরাপত্তা সেখানেও অনিশ্চিত, কারণ অব্যাহত রয়েছে গোলাবর্ষণ। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিত করতে মিসর ও কাতার নতুন করে মধ্যস্থতার চাপ বাড়িয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০২
