অবশেষে দুই সিবিএ নেতাকে আটক দেখিয়েছে যশোরের পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে যশোরে নাশকতা তৈরির চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই দুই নেতাসহ যশোরের আরও তিন আওয়ামী লীগ নেতার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে।
সিবিএর দুই নেতা হলেন টাঙ্গাইল সদর থানার বিএইউ মাদ্রাসা রোডের এনায়েতপুর গ্রামের ময়নাল হকের ছেলে এনামুল হক (৩৮) এবং ভোলার শশীভূষণ উপজেলার রসুলপুর হাজী বাড়ির মোহাম্মদ ইউনুসের ছেলে রোবেল (২৭)। বর্তমানে তারা দুজনই ঢাকার শাহবাগ থানার বাংলা মোটর এলাকার ৪০ নম্বর বাড়িতে বসবাস করেন। তারা দুজনই যুবলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত।
গত শুক্রবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কর্মচারী সংঘের খুলনা বিভাগীয় সম্মেলন চলাকালে তাদের আটক করা হয়।
আর পলাতকরা হলেন—সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ঝুমঝুমপুর এলাকার চান কসাইয়ের ছেলে জাবেদ আহমেদ, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক এবং বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আকরাম হোসেন মোল্লার ছেলে রবিউল ইসলাম।
এই ঘটনায় ফতেপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি এবং বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কুবাদ আলীর ছেলে ওহিদুল ইসলাম কোতয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক সিবিএর ব্যানারে যশোর সদর উপজেলা মিলনায়তনে গত ৮ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর জন্য ষড়যন্ত্রমূলক গোপন বৈঠক হচ্ছিল। তিনি সংবাদ পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখতে পান, উল্লেখিত আসামিরা রাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা এবং জনমনে ভীতি সৃষ্টির জন্য অন্তর্ঘাতমূলক কাজে লিপ্ত হওয়ার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির জন্য বক্তব্য দিচ্ছেন। পরে সংবাদ পেয়ে ডিবি পুলিশ সেখানে গেলে আটক দুই আসামি সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশ তাদের আটক করে। পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, তারা যুবলীগের নেতা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে তাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তারা নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত।
পুলিশ সূত্র জানায়, এনামুল হক ও রোবেল হোসেন ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সক্রিয় নেতা এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কর্মচারী সংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তারা যাত্রাবাড়ী থানার সিআর ৯৩৭/২০২৪ মামলার যথাক্রমে ৬২ ও ৬৪ নম্বর আসামি। মামলার প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আবুল বাশার জানান, আটক দুইজনের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় একটি মামলা রয়েছে এবং ময়মনসিংহের একটি মামলায় তাদের নাম আছে, তবে আসামির তালিকায় নেই। অন্যান্য থানায় মামলা আছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে। শনিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ডিবি পুলিশের ওসি মঞ্জুরুল হক ভূঁইয়া বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়। যাত্রাবাড়ীর মামলাটি সিআর হওয়ায় আদালতের নির্দেশনা ছাড়া গ্রেপ্তার করা যায় না। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় মামলা হওয়ার পর ওই মামলায় চালান দেওয়া হয়েছে।
রাতদিন সংবাদ







