Friday, December 5, 2025

নিখোঁজ মরিয়মের খবর প্রকাশের পর পাকশী রেলওয়ে থানায় জিডি নিল পুলিশ

চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা থেকে যশোরগামী যাত্রী ছিলেন যশোর শহরের পূর্ব বারান্দীপাড়ার বাসিন্দা মৌসুমি ও তার চার বছর বয়সী মেয়ে মরিয়ম। কিন্তু ২০ জুলাই রাতের ওই যাত্রা এক গভীর দুঃস্বপ্নে রূপ নেয় তাদের জন্য। রহস্যজনকভাবে অচেতন হয়ে পড়েন মৌসুমি, আর জ্ঞান ফেরার পর খুলনা স্টেশনে নিজেকে একা খুঁজে পান তিনি। কোথাও ছিল না তার কন্যা মরিয়ম। এরপর কেটে গেছে ১০ দিন, ঘুরে বেড়িয়েছেন এক রেলওয়ে থানা থেকে অন্যটিতে, পুলিশের সহায়তা পাননি—শেষ পর্যন্ত এক অজানা নম্বর থেকে মুক্তিপণ চাওয়া হয় দুই লাখ টাকা।

গত ৩১ জুলাই, অবশেষে ঘটনার দশ দিন পর সিরাজগঞ্জ বাজার পাকশী রেলওয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে নিখোঁজ শিশুটিকে ঘিরে। ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়, ২২ জুলাই রাতে মৌসুমি ও মরিয়ম চিত্রা এক্সপ্রেসের ‘জে’ বগিতে করে ঢাকা থেকে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। উল্লাপাড়া পার হওয়ার পর কী ঘটেছে তা স্পষ্টভাবে মনে নেই মৌসুমির। খুলনায় জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখেন, সঙ্গে থাকা মেয়ে, মোবাইল ও টাকা—সবকিছুই উধাও।

রনি বিশ্বাস অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন রেলওয়ে থানায় গিয়ে জিডি করতে চাইলে বলা হয় ‘ঘটনাস্থল নির্দিষ্ট না হলে জিডি হবে না’। কখনো আবার জিডি নিতেই অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। বাধ্য হয়ে খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, দর্শনা, পাকশি, পোড়াদহসহ অন্তত ৭-৮টি রেলওয়ে থানায় ছোটাছুটি করেছেন তিনি।

ঘটনার আরও নাটকীয় মোড় নেয় যখন রনির কাছে একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয়, “মেয়েকে ফেরত চাইলে দুই লাখ টাকা দাও, না হলে ফল হবে ভয়াবহ।” এরপর ৩১ জুলাই সিরাজগঞ্জ বাজার পাকশী রেলওয়ে থানায় জিডি করেন রনি। ডায়েরিতে মেয়ের গায়ের রং শ্যামলা, শরীরে অ্যালার্জির দাগ, পরনে লাল হাফপ্যান্ট এবং গায়ে মায়ের ওড়না থাকার বিষয়ও উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান জানান, বিষয়টি জানার পরই তিনি রেলওয়ে ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ডিআইজি গোলাম রউফকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। ডিআইজি রউফ জানান, বিষয়টি আগে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। বুধবার বিকেলে জানার পরপরই তদন্ত শুরু করা হয়েছে এবং রনি ও তার পরিবারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, শিশুটি উদ্ধারে বর্তমানে ট্রেনের যাত্রী তালিকা, সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংসহ সব প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযান চলছে। তবে এখন পর্যন্ত মরিয়মের অবস্থান শনাক্ত হয়নি।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর