Friday, December 5, 2025

গাজায় প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিল: খাবারের আশায় কান্না

জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় খাবারটুকুও পাচ্ছেন না ফিলিস্তিনের গাজাবাসী। খুব সামান্য পরিমাণে ত্রাণ ঢুকছে, যা সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। তারওপর প্রতিদিনই চলছে ইসরায়েলি বোমারু বিমানের হামলা।

গাজার ২০ লাখ মানুষ এখন এক মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষের মধ্যে জীবনধারণ করছেন। গাজার বাসিন্দা রাইদ আল-আথামনা জানান, সারাদিন শুধু ভাবি, আজ কী খাবো, পরিবারকে কী খাওয়াবো। একসময় বিদেশি সাংবাদিকদের গাড়ি চালালেও এখন দীর্ঘদিন ধরে তার কোনো কাজ নেই। কারণ, ইসরায়েল এখন আর বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমাদের এখানে কোনো খাবার নেই। রুটি নেই, সামান্য আটাও কিনতে পারি না। যদি পাওয়া যায়, তার দাম আকাশছোঁয়া। আজ একটু ডাল কিনতে পেরেছি, কিন্তু কাল কী খাবে আমার স্ত্রী আর সন্তানরা, জানি না।

আথামনা আরও জানান, প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও শেলিং বা বোমা হামলা হচ্ছে। মানুষ নিরাপদ আশ্রয় পাচ্ছে না, সবসময় প্রাণের ভয়। এর মধ্যেই অনাহারে রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন অনেকে। সামাজিকমাধ্যমে এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, আমি নিজে দেখেছি, কেমন করে মানুষ ক্ষুধায় রাস্তায় পড়ে যাচ্ছে।

গত মে মাসে আথামনা আশাবাদী ছিলেন—ত্রাণ ট্রাক ঢুকতে শুরু করায় গাজার মানুষ বাঁচবে। কিন্তু এখন সেই বিশ্বাস ভেঙে পড়েছে। তিনি বলেন, আজ এক টুকরো রুটির জন্যও লড়াই করতে হচ্ছে।

জাতিসংঘের সংস্থা OCHA জানিয়েছে, গাজার ৮৮ শতাংশ এলাকা এখন ‘মিলিটারি জোন’ হিসেবে চিহ্নিত। ফলে লাখো মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অতি সঙ্কুচিত আশ্রয়শিবিরে ঠাসাঠাসি করে বসবাস করছেন। অনেক সময় সেখান থেকেও তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানায়, গাজায় এখন মানুষের তৈরি দুর্ভিক্ষ চলছে। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম জানায়, গাজার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ একাধিক দিন না খেয়ে আছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে নারী ও শিশুরাও।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুধু জুলাই মাসেই না খেয়ে অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২৫ সালের শুরু থেকে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৯-এ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই।

অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০৪

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর