নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইল সদরের আউড়িয়া ইউনিয়নের মুড়দাইড়-তালতলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষায় একমাত্র অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীও অকৃতকার্য হয়েছে। ফলে এ বছর (২০২৫ সালে) বিদ্যালয়টির এসএসসি পাসের হার শূন্য শতাংশ।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে নবম শ্রেণিতে মাত্র ৭ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করে। বার্ষিক পরীক্ষার পর তারা দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলেও নিয়মিত ক্লাস করেনি। এর মধ্যে তিন শিক্ষার্থীর বিয়ের কারণে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় এবং আরও তিনজন লেখাপড়া ছেড়ে দেয়। একমাত্র শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেও উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৯৭ সালে মুড়দাইড় গ্রামে ৭০ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় মুড়দাইড়-তালতলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার কয়েক বছরের মধ্যে বিদ্যালয়টি শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ও ভালো ফলাফলের জন্য পরিচিতি লাভ করে। ২০১৩ সালে এ প্রতিষ্ঠান থেকে ১৮ জন পরীক্ষার্থীর সবাই উত্তীর্ণ হয়। ২০২১ সালেও ৭ জনের সবাই পাশ করে। তবে দীর্ঘ সময়েও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় মেধাবী শিক্ষকরা বিদ্যালয় ছাড়তে থাকেন এবং ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে আসে।
গত চার বছরের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে,
-
২০২২ সালে ৩ জন অংশ নিয়ে সবাই উত্তীর্ণ হয়।
-
২০২৩ সালে ২ জন অংশ নিয়ে কেউ পাস করেনি।
-
২০২৪ সালে ২ জন অংশ নিয়ে উভয়েই ফেল করে।
-
২০২৫ সালে ১ জন অংশ নিয়ে সে-ও অকৃতকার্য হয়।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী মুক্তা খানম বলেন, “আমি ২০০৪ সালে এখান থেকে এসএসসি পাশ করেছি। তখন বিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী ও ৭ জন শিক্ষক ছিলেন। এখন সেই চিত্র পাল্টে গেছে।”
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল আলীম ফকির বলেন, “২৮ বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করছি। অনেক কষ্ট করেও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে পারছি না। স্কুল এমপিও না হওয়ায় শিক্ষকরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছেন।”
জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “বিদ্যালয়ের ফলাফলের এই বিপর্যয়ের পেছনে শিক্ষক-প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে। প্রধান শিক্ষকরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না, এমনকি আইসিটি ল্যাব নেওয়ার প্রস্তাবও তারা ফিরিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষা সংক্রান্ত কোনো ট্রেনিংয়েও অংশ নেন না। তবুও স্কুলটির প্রতি নজর দিতে হবে। প্রয়োজন হলে বোর্ড থেকে তাদের শোকজ করা হতে পারে।”







