Thursday, July 17, 2025

গাজায় ক্যাফে-স্কুল ও ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলা: প্রাণ গেল সাংবাদিকসহ বহু শিশুর

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ক্যাফে, স্কুল ও ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রসহ একাধিক স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। সোমবার (৩০ জুন) রাতে আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা শহর ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এসব হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে আল-বাকা নামে উত্তর গাজার এক সমুদ্রতীরবর্তী ক্যাফেতে এক জন্মদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত নারী-শিশুসহ ৩৯ জন প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে সাংবাদিক ইসমাইল আবু হাতাবও রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কোনো পূর্বসতর্কতা ছাড়াই সেখানে বোমা ফেলা হয়। ইয়াহিয়া শরিফ নামে একজন বলেন, “আমরা ছিন্নভিন্ন দেহ পড়ে থাকতে দেখেছি। এখানে শিশুদের জন্মদিন চলছিল, কোনো রাজনৈতিক বা সামরিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না।”

এছাড়া গাজা শহরের ইয়াফা স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুতদের ওপরও হামলা চালানো হয়। হামাদা আবু জারাদে নামে এক আশ্রয়প্রার্থী জানান, তারা হামলার মাত্র পাঁচ মিনিট আগে সরে যাওয়ার নোটিশ পান। তিনি বলেন, গত ৬৩০ দিনেরও বেশি সময় ধরে আমরা কোনো সাহায্য পাইনি। প্রতিদিনই মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছি।

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকার আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের চত্বরে চালানো আরেক হামলায়ও আহত হন অনেকে। ওই সময় আশপাশে অবস্থানরত হাজারো মানুষ ছুটে নিরাপদ আশ্রয়ের চেষ্টা করেন। আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজজুম বলেন, এই হাসপাতালে এর আগেও অন্তত ১০ বার হামলা হয়েছে। এটি প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর আরেকটি মারাত্মক আঘাত।

এছাড়া গাজার দক্ষিণাঞ্চল খান ইউনিসে বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’-এর একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে খাবারের জন্য অপেক্ষারত সাধারণ মানুষের ওপর চালানো হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছেন।

আল জাজিরা বলছে, গত মে মাসে জিএইচএফ সীমিত পরিসরে গাজায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করে। এরপর থেকেই এসব কেন্দ্রে হামলা নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে হামলায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০০, আর আহত হয়েছেন ৪ হাজারের বেশি।

এদিকে ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাদের নিরস্ত্র ত্রাণপ্রার্থীদের ওপর গুলি চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সেনা জানিয়েছেন, অনেক সময় হুমকি না থাকলেও অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ মেলে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানায়, আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের ভেতরে শরণার্থীদের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুতে বোমা হামলা হয়েছে, যা রোগী ও আশ্রয়প্রার্থীদের জীবনকে চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে। এটি গাজার স্বাস্থ্যখাতের ওপর পদ্ধতিগত ও পরিকল্পিত হামলার অংশ।

অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০৩

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর