Saturday, December 6, 2025

ইরানে শাসনব্যবস্থার ভিত্তি নাড়া দিতে চায় ইসরায়েল

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিঃশেষ করার লক্ষ্যের গণ্ডি পেরিয়ে এবার দেশটির শাসন কাঠামোকে ভেঙে দিতে চায় ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরাসরি ইরানি জনগণকে আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামি শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে নামতে। এদিকে, এই প্রক্রিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়টি বিবেচনায় নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।

মধ্যপ্রাচ্যে সরকার পতনের জন্য বাইরের হস্তক্ষেপের নজির নতুন নয়। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের শাসনের অবসান এবং ২০১১ সালে ন্যাটো জোটের অভিযানে লিবিয়ায় গাদ্দাফির পতন—এই দুই উদাহরণই দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতা ও সহিংসতা ডেকে এনেছে গোটা অঞ্চলে।

ইরানে শাসন পরিবর্তনের ইতিহাস
ইরানে রাজতন্ত্রের পতন ঘটে ১৯৭৮-৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে। কিন্তু তারও আগে, ১৯৫৩ সালে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র সহায়তায় এক অভ্যুত্থানে রাজা মোহাম্মদ রেজা পাহলভিকে আবার ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। শাহের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনের সুযোগে নির্বাসন থেকে ফিরেন আয়াতুল্লাহ খোমেনি। তিনি বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়ে একটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, যার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে তীব্র মার্কিন ও ইসরায়েলবিরোধী রাষ্ট্রনীতি।

ইসলামী শাসনের পরিণতি
ইসলামী প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর খোমেনির শাসন আমলে ইরান শুধু তার অভ্যন্তরীণ শাসনে পরিবর্তন আনে না, বরং পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে আমেরিকার আধিপত্যকেও সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে। এতে যুক্তরাষ্ট্র তার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাববলয় হারায় এবং ইরানকে ঠেকাতে বহুমুখী কৌশল নেয়। ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে বিদেশি হস্তক্ষেপের আশঙ্কা ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায়।

খামেনির আমলে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ও কৌশল
খোমেনির মৃত্যুর পর ১৯৮৯ সালে সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি স্বনির্ভরতা, সামরিক শক্তি এবং চীন-রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রতা গড়ে তোলার নীতিতে অটল থাকেন। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) এবং বিদেশে শিয়া গোষ্ঠীর মাধ্যমে প্রভাব বজায় রাখতে সচেষ্ট ইরান, সহজে পিছু হটবে না বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর