বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের জীবন্ত কিংবদন্তি দাবাড়ু রাণী হামিদ ৮২ বছর বয়সেও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিতে ছুটে বেড়ান বিশ্বজুড়ে। এবার দিল্লির উন্মুক্ত গ্র্যান্ডমাস্টার দাবা টুর্নামেন্টে অংশ নিতে গিয়ে চরম বিড়ম্বনার মুখে পড়েছেন তিনি।
রাণী হামিদ শারীরিক কারণেই একা সফর করেন না, সঙ্গে রাখেন একজন সহযাত্রী। এবার তার সফরসঙ্গী ছিলেন দাবাড়ু আছিয়া সুলতানা। কিন্তু দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর ভারতীয় ইমিগ্রেশন আছিয়াকে দেশে ফিরিয়ে দেয়।
আছিয়া জানান, দুজনেই সার্ক ভিসা নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ দাবি করে, পূর্বে আছিয়া মেডিকেল ভিসায় ভারতে এসে দাবা টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিলেন, যা ভিসা শর্তের লঙ্ঘন। এ কারণেই তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
আছিয়া বলেন, “সেই সফরে আমার ডাক্তার দেখানোরও পরিকল্পনা ছিল। তবে ডাক্তার না থাকায় আমি কেবল খেলেই ফিরে আসি। ভারতীয় দাবা ফেডারেশনের লোকজনও বিষয়টি ইমিগ্রেশনকে ব্যাখ্যা করেছিলেন। জরিমানা দিতে হলেও আমি প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু তারা বলেন, ‘কলকাতা ইমিগ্রেশনে তথ্য রয়েছে, কিছুই করার নেই।’”
আছিয়া নতুন হলেও রেটিংধারী একজন দাবাড়ু এবং এর আগে শ্রীলঙ্কা সফরেও রাণী হামিদের সঙ্গে ছিলেন। দিল্লি টুর্নামেন্টেও দুজনের একসঙ্গে খেলার কথা ছিল।
আছিয়া দেশে ফেরায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন রাণী হামিদ। বিমানবন্দর ও আনুষ্ঠানিকতায় একা অনেকটা বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়তে হয়েছে তাকে। দিল্লির টুর্নামেন্ট শেষ করেই মুম্বাইয়ে আরেকটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও আছিয়ার অনুপস্থিতিতে সেটি আর সম্ভব নয়।
রাণী হামিদের ছেলে, সাবেক ফুটবলার কায়সার হামিদ বলেন, “আম্মার একা থাকা খুব কষ্টের। আছিয়া কয়েকবার তার সঙ্গে গিয়েছিল। এবার না থাকায় তিনি ভালো খেলতেও পারছেন না, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।”
উপমহাদেশের এই কিংবদন্তি দাবাড়ু বহু আন্তর্জাতিক আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন, যাদের আয়োজকরাই খরচ বহন করে। দিল্লিতেও ছিল তেমনই আয়োজন।
রাণী হামিদের এই বিড়ম্বনা ও আছিয়া সুলতানার ফেরত আসার ঘটনাটি ভারতের শীর্ষ গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া-তেও গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক







