ঢাকার ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দীর্ঘ ১৬৫৯ দিন পর আবারো গড়াচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলের বল। আজ (৪ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের মাধ্যমে নতুন রূপে ফিরছে দেশের ফুটবলের ‘হোম গ্রাউন্ড’।
২০২১ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া সংস্কারকাজের কারণে এই মাঠে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল আন্তর্জাতিক ফুটবল। সর্বশেষ ম্যাচ হয়েছিল ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নেপালের বিপক্ষে। এরপর বাজেট বেড়ে দাঁড়ায় ১৫৮ কোটি টাকায়, দফায় দফায় সংস্কারের পর নতুন ফ্লাডলাইট, অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক, গ্যালারি, প্রেসবক্স ও গ্যালারির ছাদে প্রথমবারের মতো লাইট বসানো হয়। এখন এক নতুন রূপে হাজির হয়েছে দেশের সবচেয়ে স্মরণীয় ক্রীড়া ভেন্যুটি।
বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার জন্য এটি জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ। যদিও তিনি ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে দলে আছেন, এবারই প্রথম পা রাখছেন এই মাঠে কোচ হিসেবে। তার মতোই মোরসালিন, মিতুল মারমাসহ অনেক তরুণ ফুটবলারও আজ অভিষেক করবেন এই ঐতিহাসিক মাঠে।
গত কয়েক বছর বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাই ছিল জাতীয় দলের অলিখিত হোম ভেন্যু। তবে জাতীয় স্টেডিয়ামের আবেগ ও ইতিহাসের কাছে সেটি তেমন কিছু নয়। এখানেই ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ, ২০১০ সালে এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ের কীর্তি গড়েছিল। ২০১১ সালে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচ, কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানের আগমন কিংবা মোহাম্মদ আলীর উপস্থিতিও এই মাঠের অংশ।
জাতীয় স্টেডিয়াম মূলত একসময় ক্রিকেটের জন্য পরিচিত ছিল। বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টসহ শতাধিক ঐতিহাসিক ম্যাচের সাক্ষী এই মাঠ। তবে এখন এটিই আবার হয়ে উঠতে যাচ্ছে ফুটবলের প্রাণকেন্দ্র। হামজা-জামালদের কাঁধে এখন দায়িত্ব নতুন রূপের স্টেডিয়ামে ফুটবলের নতুন যুগ সূচনার।
আজকের ম্যাচ শুধু একটি প্রীতি ম্যাচ নয়, বরং ফুটবলপ্রেমীদের জন্য একটি আবেগের দিন—যেখানে অতীতের গৌরব, বর্তমানের প্রত্যাশা ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা মিলেমিশে এক নতুন অধ্যায় শুরু করবে জাতীয় স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসে।







