ভূমি জবরদখল, অর্থ আত্মসাৎ এবং মানি লন্ডারিংসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান (শাহ আলম) ও তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ তলবের মাধ্যমে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতি অনুসন্ধান আরও গতি পেল।
দুদকের পাঠানো চিঠিতে আগামী ২৫ ও ২৬ মে তাদের সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
চিঠিতে বলা হয়, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি, জমি দখল, ব্যাংক ঋণের অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ স্থানান্তর ও হস্তান্তরসহ বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে আহমেদ আকবর সোবহান, তার স্ত্রী আফরোজা বেগম, বড় ছেলে সাদাত সোবহান ও তার স্ত্রী সোনিয়া ফেরদৌসী সোবহানকে ২৫ মে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
২৬ মে ডাকা হয়েছে সায়েম সোবহান আনভীর ও তার স্ত্রী সাবরিনা সোবহান, কো-চেয়ারম্যান সাদাত সোবহান, ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান (সানভীর), ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান এবং তার স্ত্রী ইয়াশা সোবহানকে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর রাজনৈতিক পরিবর্তনের ধারায় আগের সরকারের ঘনিষ্ঠ বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর ওপর নজরদারি জোরদার করে রাষ্ট্রের বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা। বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিআইসি, যা পরবর্তীতে বিস্তৃত হয় দুর্নীতি দমন কমিশন, সিআইডি এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কার্যক্রমে।
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে আহমেদ আকবর সোবহানসহ পরিবারের আট সদস্যের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে বিএফআইইউ। একই মাসে আদালতের আদেশে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এছাড়া সিআইডির অনুসন্ধানে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল এবং বিশাল অঙ্কের অর্থপাচারের অভিযোগ উঠে আসে।
বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের বৃহৎ ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলোর অন্যতম, যাদের বিরুদ্ধে এমন সমন্বিত তদন্ত দেশে দুর্নীতি দমনে নজিরবিহীন পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসা তথ্যগুলো দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি এবং কর ব্যবস্থার ভবিষ্যতের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।







