Saturday, May 17, 2025

আওয়ামী লীগের পলাতক নেতারা খুঁজছেন ব্যবসায়িক অংশীদার

দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন অঞ্চলের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতারা বর্তমান রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বিপাকে পড়েছেন। একসময় ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে যারা হাজার কোটি টাকার ব্যবসা সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রেক্ষাপটে তাদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এবং এখন বিদেশে বসেই অংশীদার খুঁজে তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।

নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবার—বিশেষ করে শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমান—যাদের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা, তারা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করলেও বর্তমানে বিদেশে থেকে নতুন অংশীদার খুঁজছেন। জানা গেছে, তারা বিএনপিপন্থী একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে অংশীদারিত্বে গিয়েছেন। অপরদিকে, একই জেলার প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী কারাগারে, আর তার গাজী গ্রুপের ব্যবসা কার্যত বন্ধ। তিনিও এখন অংশীদার খুঁজছেন।

কমবেশি একই চিত্র দেখা যাচ্ছে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাবেক অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল, হাছান মাহমুদ, আবু জাফর মো. শফিউদ্দিন, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সালমান এফ রহমান ও নসরুল হামিদের মতো নেতাদের ক্ষেত্রেও। কেউ রাশিয়া, কেউ যুক্তরাজ্য, কেউবা সিঙ্গাপুরে অবস্থান করে নিজ প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা পরিচালনার চেষ্টা করছেন। অধিকাংশ নেতার ব্যবসা এখন ক্ষতির মুখে, ব্যাংক ঋণ খেলাপি অবস্থায়, অনেকে সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছেন।

বিভিন্ন সূত্র জানায়, এদের অনেকে এখন বিএনপি বা অন্য বিরোধীদলঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিলে অংশীদারিত্ব গড়ছেন। কারণ, দেশে নতুন বিনিয়োগের পরিবেশ নেই, ঠিকাদারি ব্যবসাও স্থবির। ফলে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা শত শত কোটি টাকার সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখতে তাদের বিকল্প খুঁজতে হচ্ছে।

দলীয়ভাবে কেউ মুখ খুলতে না চাইলেও আওয়ামী লীগের কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতা স্বীকার করেছেন, দলের বহু নেতার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, “অনেক প্রতিষ্ঠান এখন লভ্যাংশ দূরে থাক, মূলধনও হারাচ্ছে।” অন্যদিকে, সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী স্বীকার করেন, আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা এখন রোষানলের শিকার।

আওয়ামী লীগ দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে দলটির ২৬৫ প্রার্থীর মধ্যে ১৭০ জনই ছিলেন ব্যবসায়ী। তাদের অনেকের সম্পদের পরিমাণ শত কোটি টাকার বেশি হলেও বর্তমান বাস্তবতায় তা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর