Friday, December 5, 2025

পিতাকে মারধরের অভিযোগে ছেলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

কপিলমুনি (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দক্ষিণ সলুয়া গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ নওয়াব আলী (৮০) তার বড় ছেলে নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সোমবার সকালে কপিলমুনি প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

নওয়াব আলী অভিযোগ করেন, গত ২৬ এপ্রিল তার ছেলে নাজমুল ইসলাম ও স্ত্রী মোছাঃ ছবুরা বেগম মিলে তার বিরুদ্ধে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে লেখা বক্তব্য পাঠের কথা বলা হলেও, তার স্ত্রী অক্ষরজ্ঞানহীন হওয়ায় সেটি সত্য হতে পারে না। নওয়াবের দাবি, ছেলে নাজমুল মাকে বিভ্রান্ত করে এবং মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে সামাজিকভাবে তাকে ও তার পরিবারকে হেয় করার চেষ্টা করছে।

তিনি জানান, গত ১১ এপ্রিল ছেলে নাজমুল ও তার স্ত্রী তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে, যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নাজমুলকে পুলিশ গ্রেফতার করে এবং আদালত জামিনে মুক্তি দেয়। জামিনে মুক্তির পরও নাজমুল আবারো মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে তাকে নির্যাতন করছেন বলে অভিযোগ করেন নওয়াব আলী।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ সলুয়ায় মাদ্রাসার খরিদা জমিতে ঈদগাহ নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনৈক সাঈদুর রহমান মোড়লের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগও সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে সরকারি জমির পাশে এলাকাবাসী নিজেদের প্রয়োজনে জমি ব্যবহার করে আসছিলেন। এ নিয়ে তার ছোট ছেলে শাহাদাৎ হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

বৃদ্ধ নওয়াব আলী অভিযোগ করেন, বড় ছেলে নাজমুল দীর্ঘদিন ধরে তার মাকে প্রভাবিত করে শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিতে চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। এতে ব্যর্থ হয়ে বারবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। এমনকি গত ৭ এপ্রিল তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।

তিনি আরও জানান, অতীতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ব্যবহার করে বড় ছেলে নাজমুল তাকে এবং ছোট ছেলেকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করেছে। নাজমুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অর্থ আত্মসাৎ, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং ব্যবসায়িক প্রতারণার অভিযোগও রয়েছে। ২০১৮ সালে রামকৃষ্ণ দাশের মৃত্যুর ঘটনায় এবং ২০২০ সালে পোল্ট্রি ব্যবসায়ী বিপ্লব সরকারের করা সাধারণ ডায়েরিতেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে আসে।

নাজমুল ইসলাম মুঠোফোনে এক প্রতিক্রিয়ায় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি স্বীকার করেন, তার মা পড়াশোনা জানেন না।

সংবাদ সম্মেলনের শেষদিকে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে নওয়াব আলী বলেন, “আর যেন কোনো পিতা সন্তানের হাতে এভাবে নির্যাতনের শিকার না হন।”

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর