৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে মিয়ানমারের সাগাইং শহর। শহরের চারদিকে শুধু ধ্বংসস্তূপ আর লাশের গন্ধ। স্থানীয়রা বলছেন, এটি যেন পারমাণবিক বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত একটি নগরী।
গত ২৯ মার্চের ভয়াল ভূমিকম্পে সাগাইং শহরের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশপাশের গ্রামীণ অঞ্চলগুলোও পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত তিন হাজার ১৪৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তবে ধারণা করা হচ্ছে আরও অনেক লাশ ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, উদ্ধার তৎপরতায় মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কোনো উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ নেই। বরং রাস্তায় তল্লাশি ও বাধা সৃষ্টি করে পরিস্থিতি আরও জটিল করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্থানীয় বাসিন্দা কো জেয়ার জানান, “আমরা নিজেরাই গৃহস্থালি সরঞ্জাম দিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করছি। সবাই মিলে গণকবর দিচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “আফটারশক এখনো হচ্ছে। কেউ ঘরে ঘুমাতে সাহস পাচ্ছে না। আমি নিজেও দরজার পাশে ঘুমাই, যেন দরকার হলে দৌড়াতে পারি।”
ভূমিকম্পে রাস্তাঘাট, ছোট সেতু ও কালভার্ট ধসে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। মান্দালয় থেকে মাত্র ৪৫ মিনিট দূরত্বের শহরটিতে এখন পৌঁছাতে সময় লাগছে একই, তবে রাস্তাগুলোর বেহাল অবস্থার কারণে যাত্রা ভয়ংকর।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক কিয়াও মিন জানান, “সাগাইংয়ের ঘরবাড়ি, স্কুল, মন্দির, মসজিদ ও দোকান সবই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আমরা খালি হাতে বা সামান্য যন্ত্রপাতি নিয়ে জীবিতদের উদ্ধারে কাজ করছি।”
জাতিসংঘের সাবেক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা দেখছি বেসামরিক লোকজনই ধ্বংসস্তূপে খনন করছে। সামরিক সরকার কেন উদ্ধার ও ত্রাণে তাদের বাহিনীকে নামাচ্ছে না?”
সাগাইং এখন যেন এক মৃত্যুপুরী — যেখানে বেঁচে থাকা মানুষগুলোও আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।
অনলাইন ডেস্ক







