ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এক বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন পরবর্তী ভুল চিকিৎসায় ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী উৎস ভট্টাচার্যের মৃত্যু ঘটেছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে ফাতেমা (প্রা.) হাসপাতাল অ্যান্ড ইকো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নাকের পলিপাস অপারেশন করা হয় উৎসের। অপারেশন সফল হওয়ার পরও তিনি অচেতন হয়ে পড়েন এবং পরে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় উৎসের বড় ভাই উচ্ছাস ভট্টাচার্য কালীগঞ্জ থানায় ৩ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
উৎস ভট্টাচার্য কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল ভট্টাচার্যের ছেলে এবং সরকারি মাহতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উৎসকে পলিপাস অপারেশনের জন্য ফাতেমা হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে ডা. কাজী রাজিবুল ইসলাম অপারেশন করেন এবং অ্যানেসথেসিয়ার দায়িত্বে ছিলেন ডা. প্রবীর কুমার মন্ডল। কিন্তু অপারেশনের পর তার জ্ঞান ফিরেনি। পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ফাতেমা হাসপাতালে চিকিৎসার মান অত্যন্ত নিম্নমানের, এবং রোগীদের জন্য যথাযথ সুযোগ-সুবিধা না থাকা সত্ত্বেও গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন করা হয়, যা রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই হাসপাতালে অনেক রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম ও দক্ষ জনবল না থাকার কারণে এমনটি ঘটে।
উৎসের মৃত্যুর পর হাসপাতালটি বন্ধ করে রোগীদের অন্যত্র পাঠানো হয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিৎসক জানান, যদি অপারেশনের পর রোগীর জ্ঞান না ফেরে, তবে তা অবশ্যই তদন্তের বিষয়। এটি অ্যানেসথেসিয়ার ভুল অথবা সার্জিক্যাল জটিলতার কারণে হতে পারে, যা সঠিকভাবে তদন্ত করা উচিত।
উৎসের মৃত্যুতে কলেজ ও স্থানীয় এলাকাবাসী শোকের মধ্যে রয়েছে। তার সহপাঠী এবং শিক্ষকরা জানান, উৎস একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন, যার অকাল মৃত্যু গোটা কলেজ এবং এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে।