মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রোববার সকালে যশোর কালেক্টরেট সভা কক্ষে একটি বিভাগীয় শেয়ারিং ও ওরিয়েন্টেশন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক-১) মুহঃ জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার।
সভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার জেলা প্রশাসকবৃন্দ, যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্ধশত স্টেকহোল্ডার উপস্থিত ছিলেন। সভায় দেশের মানবপাচারের অতীত ও বর্তমান হালচিত্র তুলে ধরে রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, যশোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট নূর ইসলামসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, মানবপাচার একটি ঘৃণিত অপরাধ। এই অপরাধের প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই শ্রেয়। দেশের সম্মান বাঁচাতে এই মানবপাচার বন্ধ করতে হবে। যারা সম্ভাব্য পাচারের ঝুঁকিতে আছেন এমন জনগোষ্ঠিকে কর্মমুখী প্রশিক্ষণসহ নানা রকমের ট্রেনিং ও আর্থিক ও মানসিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে হবে। দেশের বেকার যুবক-যুবতীদের আত্নকর্মসংস্থান এবং যুক্তিসংগত মুজুরী কাঠামো প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। প্রযুক্তি জ্ঞান নির্ভর সমাজ গঠন করে পাচার প্রতিরোধ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। পাচারের শিকার নারী ও পুরুষ এবং শিশুদের মানবিক আর্থিক ও জ্ঞানভিত্তিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে সমাজের মেইন স্ট্রিমে সংযুক্ত করতে হবে। পরিস্থিতির শিকার এসব ভিকটিমকে সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার নিশ্চয়তা দিতে হবে। সর্বোপরি একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন, সামাজিক ন্যায় বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। তবে পাচার মুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব বলে মনে করেন প্রধান অতিথিসহ বিভাগের সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের স্টেকহোল্ডারগণ।
সভায় জানানো হয় গত বছর খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় মানবপাচার সংক্রান্ত ঘটনায় ২৩৮টি মামলা হয়েছে। এই সময়ে ৯২টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। যার মধ্যে ৫টি মামলায় ৯ আসামীর সাজা নিশ্চিত করা গেছে। সভায় জানানো হয় এ পর্যন্ত এই বিভাগে নারী ও শিশু পাচারের ঘটনায় ৮১১টি মামলা বিচারাধীন আছে।
সুইজারল্যান্ড সরকারের আর্থিক সহায়তায় উইনরোক এবং ইনসিডিন বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে।