Friday, December 5, 2025

চৌগাছায় নিখোঁজের তিনদিন পর ইজিবাইক চালকের লাশ উদ্ধার, তিনজন আটক

যশোরের চৌগাছায় তিনদিন ধরে নিখোঁজ থাকা ইজিবাইক চালক সোহাগ হোসেন রকির (২২) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে তরিকুল ইসলাম পৌর কলেজ সংলগ্ন বুড়িগাঙ নদীর পাড় থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত রকি চৌগাছা উপজেলার পুড়াহুদা গ্রামের লিয়াকত হোসেনের ছেলে।

১৬ জানুয়ারি সকাল ৭টায় প্রতিদিনের মতো ইজিবাইক নিয়ে বের হন রকি। কিন্তু সেদিন আর তিনি বাড়ি ফিরে আসেননি। রকির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এবং খোঁজাখুঁজিতে কোনো সন্ধান না পাওয়ায় তার পিতা লিয়াকত হোসেন ১৮ জানুয়ারি চৌগাছা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), যশোর তদন্ত শুরু করে।

পিবিআই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করে। তারা হলো সোহানুর রহমান (১৭), শরিফুল ইসলাম ওরফে সজল (১৭), এবং সুজন হোসেন (১৫)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, রকির ইজিবাইক ছিনিয়ে নিতে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে। তাদের দেখানো মতে বুড়িগাঙ নদীর পাড় থেকে কচুরিপানার নিচে লুকানো অবস্থায় রকির লাশ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের জবানবন্দি অনুযায়ী, রকির বন্ধুরা তার ইজিবাইক ছিনতাইয়ের জন্য পরিকল্পনা করে। ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তারা রকিকে তরিকুল ইসলাম পৌর কলেজের পাশে নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানেই তাকে লাড্ডু খাওয়ার কথা বলে সঙ্গে নিয়ে যায়। লাড্ডু খাওয়ার সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা হয় এবং তারা রকির গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তার লাশ নদীর পাড়ে কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রেখে ইজিবাইকটি বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যশোরের দিকে রওনা দেয়। তবে পথিমধ্যে পুলিশের উপস্থিতি দেখে ইজিবাইকটি ফেলে পালিয়ে যায়।

পিবিআই ও স্থানীয় পুলিশের সমন্বয়ে পরিচালিত এই তদন্তে এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যশোরের চৌগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলার তদন্তকারীরা ইজিবাইক উদ্ধারের পাশাপাশি হত্যার অন্যান্য আলামতও সংগ্রহ করছে।

নিহত রকির পরিবার এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেছেন। তারা জানান, রকি তার ইজিবাইক চালিয়ে পরিবারের খরচ চালাতেন। প্রতিদিন রাতে বাড়ি ফিরে আসা রকি সেদিন ফেরেননি, যা তাদের জন্য এক অমানবিক অভিজ্ঞতা হয়ে উঠেছে।

পিবিআই যশোর ইউনিট জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে থাকা মূল কারণ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টতা উদঘাটনের জন্য তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

চৌগাছা প্রতিনিধি

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর