যশোর জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের ৫৭৭ টি পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে, যার ফলে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ও পাঠদানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। ৩৩১ জন সিনিয়র সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এখনো ২৪৬টি পদ শূন্য রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
যশোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, জেলার ১,২৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ৭,২৮৩টি সহকারী শিক্ষক পদ অনুমোদিত, এর মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছেন ৬,৭০৬ জন, ফলে শূন্য রয়েছে ৫৭৭টি পদ। এ ৫৭৭টি পদে ৩৩১ জন সিনিয়র সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন, যার ফলে প্রধান শিক্ষক পদে নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ নেই। বর্তমানে ২৪৬টি সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে, যার ফলে শিক্ষক সংকট আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শূন্য পদগুলোর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৩৩টি, শার্শায় ৫১টি, মনিরামপুরে ১১৩টি, বাঘারপাড়ায় ৪৮টি, ঝিকরগাছায় ৬৯টি, চৌগাছায় ৩৭টি, কেশবপুরে ৮৫টি, এবং অভয়নগরে ৪১টি পদ শূন্য রয়েছে। এসব উপজেলায় চলতি দায়িত্বে রয়েছেন সিনিয়র সহকারী শিক্ষকরা, তবে নিয়োগ যোগ্য পদ শূন্য রয়েছে।
কেশবপুর উপজেলার কিছু বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে, যেখানে সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চলছে মাত্র তিন-চার জন শিক্ষক দিয়ে, অথচ প্রয়োজন পাঁচ থেকে ছয় জন শিক্ষক।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক যখন উপজেলা সদরে দাপ্তরিক কাজে যান, তখন একজন শিক্ষককে একসাথে দুটি শ্রেণি পড়াতে হয়, ফলে পাঠদান সঠিকভাবে দেওয়া সম্ভব হয় না, এবং এর ফলে পুরো শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে।
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা জানান, প্রধান শিক্ষক না থাকলে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ করা সহকারী শিক্ষকদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে, আর অতিরিক্ত ক্লাস নিতে বাধ্য হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রমে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই শূন্য পদে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান তারা।
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, “সকল বিদ্যালয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম প্রধান শিক্ষক নিয়ন্ত্রণ করেন, এবং এজন্য সিনিয়র সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে সহকারী শিক্ষক সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে, এবং নিয়োগের মাধ্যমে দ্রুত এই সংকট সমাধান হবে।”







