যশোরের পুলেরহাটস্থ আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে গত শুক্রবার রাতে ড. মিজানুর রহমান আজহারীর তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে নজিরবিহীন চুরি ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। মাহফিলের সময় বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগমের মধ্যে মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার, মানিব্যাগ ও নগদ টাকা খোয়া যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় ৪১০টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) জমা পড়েছে, যার মধ্যে ৪০৫টি সরাসরি মাহফিলে চুরি হওয়া সামগ্রী সম্পর্কিত।
মাহফিল চলাকালে ভিড়ের সুযোগে অসংখ্য মানুষের মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ও মানিব্যাগ চুরি হয়ে যায়। বারান্দিপাড়ার রাইসুল ইসলাম জানান, “গতকাল আজহারী হুজুরের মাহফিলে ভিড়ের মধ্যে থেকে আমার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ খোয়া গেছে। আমি থানায় জিডি করেছি।”
মাহফিলে চুরি ছাড়াও অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে একাধিক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। প্রচণ্ড ভিড়ের চাপে পদদলিত হয়ে প্রায় ৩০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কিসমত নওয়াপাড়ার রবিউল ইসলাম জানান, “প্রধান ফটকের কাছে প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে পড়ে যাই এবং এক পর্যায়ে পদদলিত হতে থাকি। প্রায় ১৫-২০ মিনিট পর কিছু মুসল্লির সহায়তায় হাসপাতালে ভর্তি হই।”
মাহফিলে উপস্থিত বিশাল জনসমাগম সামাল দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। স্থানীয়রা জানান, এত বড় একটি আয়োজনের সময় যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত না করায় এই ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। চুরির ঘটনাগুলো মূলত নিরাপত্তার অভাব থেকেই ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চুরির ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগীরা যশোর কোতোয়ালি থানায় জিডি করতে ভিড় জমাচ্ছেন। থানার ডিউটি অফিসারের তথ্যমতে, রাত ৭টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত মোট ৪১০টি জিডি জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৪০৫টি জিডি মাহফিলের চুরি-সংক্রান্ত। বাকি পাঁচটি অন্যান্য বিষয়ে।
এত বিশাল আয়োজনের সময় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব ছিল বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা বলছেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এমন বিশৃঙ্খলা রোধে আরও কার্যকর ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন ছিল। ধর্মীয় মাহফিলের মতো পবিত্র আয়োজনে এমন চুরির ঘটনা এবং পদদলিত হয়ে মানুষ আহত হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক।







