যশোরে যুবকের পকেটে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে সিসি ক্যামেরায় ধরা খাওয়া রাজাপুরের সেই আলোচিত জব্বার আদালতের ডাকে সাড়া দেননি। তিনি রাজাপুর গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদিনের ছেলে। মামলার বাদী ও সাক্ষীর উপস্থিতি জামিন শুনানীর দিন রোববার ধার্য থাকলেও জব্বার আদালতে হাজির হননি। তবে, মামলার বাদী সদর ফাঁড়ির এএসআই উজ্জল কবীর গতকাল আদালতে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু আদালত এবার তাকে মামলার স্বাক্ষী আব্দুর জব্বারকে হাজির করার নির্দেশ দিয়ে আগামি ১৫ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন জেলা ও দায়রা জজ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক।
গত ২০ নভেম্বর যশোর শহরের পালবাড়ি এলাকা থেকে ৩৫ পিছ ইয়াবাসহ রাফিউল হাসান রোহানকে আটক করে পুলিশ। তিনি সদর উপজেলার ইছালী ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের হাসান আলীর ছেলে। মামলার বাদী কসবা ফাঁড়ির এএসআই উজ্জ্বলের দাবি শুক্রবার রাত সাতটা পাঁচ মিনিটে যশোর ইনস্টিটিউট অব নার্সিং সাইন্স এন্ড মিউওয়াইফারি মার্কেটের নীচতলা থেকে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার প্যান্টের সামনের ডানপাশের পকেট থেকে ৩৫ পিছ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এদিকে, এর প্রকৃত ঘটনা পাশের একটি প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরায় উঠে আসে। সেখানে স্পষ্ট উঠে আসে জব্বার রোহানের পকেটে ইয়াবা দেয়। পরে পুলিশ এসে রোহানকে আটক করে। এদিকে,মামলার বাদী এএসআই উজ্জল কবীর ও আলোচিত জব্বারকে নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। প্রকাশ হওয়া ভিডিও দেখা যাচ্ছে মামলার বাদী এ এসআই ঘটনাস্থলে এসে সরাসরি রোহানকেই তল্লাশী করে। রোহানের পাশেই জব্বার ছিলো। অথচ জব্বারকে তল্লাশী না করা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ কর্মকর্তা উজ্জলের সাথে ওই জব্বারের রয়েছে দহরম মহরম সম্পর্ক। একই মোটরসাইকেলে তারা বিভিন্ন সময় চলাচল করে। পুলিশ সদস্য উজ্জলের নাম ভাঙ্গিয়ে মাসোয়ারা আদায় করে জব্বার। নানা ধরণের ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করায় এ চক্রের কাজ। রোহানের পরিবারের এক সদস্য জানান, ওই উজ্জলের নাম করেই প্রথমে মোটা অংকের টাকা দাবি করেছিলো জব্বার। টাকা না দেওয়ায় রোহানকে ডেকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে।
এ বিষয়ে এএসআই উজ্জল কবীর বলেন, তিনি আদালতে গিয়েছিলেন কিন্তু জব্বার আসেনি। আদালত তাকে জব্বারকে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন। রোহানকে আটকের সময় জব্বার পাশে ছিলো তবে, কেন তাকে তল্লাশি করলেন না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ বিষয়ে এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলবেন না বলে জানান। এদিকে, আসামি রোহানের পক্ষের আইনজীবী মাহমুদ কবির কাকন জানিয়েছেন, পরিবার তাকে আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত করেছে। একই সাথে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি সিসি টিভির ফুটেজ দিয়েছেন। যাতে দেখা যাচ্ছে মামলার জব্দ তালিকার প্রধান স্বাক্ষী আব্দুর জব্বার ঘটনাস্থালে রোহানের সাথে আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন। ভিডিওতে রোহানের প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেন আব্দুর জব্বার। এরমধ্যে পুলিশ এসে রোহানকে আটক ও প্যান্টের পকেট থেকে ইয়াবা উদ্ধার করে। এটা যে সাজানো নাটক তা আর বুঝতে বাকি নেই কারো। তিনি আরো বলেন, জব্বার না আসায় বিচারক এ আবেদনের শুনানী আগামি ১৫ ডিসেম্বর ফের জামিন শুনানীর দিন ধার্য করেন।
উল্লেখ, আলোচিত আব্দুর জব্বার ইছালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোশাররফ হোসেন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। নিহত মোশাররফ হোসেনের স্বজনেরা এ তথ্য জানিয়েছেন ।
বিশেষ প্রতিনিধি







