কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা রয়েছে জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের নামে স্মরণ সভা করতে হবে। কিন্তু সে নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখাচ্ছে খুলনার কয়রার অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কলেজের অধ্যক্ষ সহ সংশ্লিষ্টরা। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এর নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
কয়রা উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, কয়রা উপজেলার ৬৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মধ্যে ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উওর বেদকাশী কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ আব্দুল মাজেদ বলেন,তিনি এই বিষয়ে কিছু জানেন না। উপজেলা শিক্ষা অফিসার কোন চিঠি দেননি।
মাত্র দুই দিন আগে চিঠি পেয়েছিলেন বলে জানান সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলম। তিনি বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে ডিসেম্বরের ১ অথবা ২ তারিখে অনুষ্ঠিনটি করা হবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়রা উপজেলা ছাত্র প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী বলেন, জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতরা হলেন এই প্রজন্মের জাতীয় বীর। ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনা বাংলাদেশের জনগণ ও রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন। ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে প্রায় ১৪২৩ জন শহীদ ও ২২ হাজার মানুষের পঙ্গুত্ব ও অঙ্গহানির বিনিময়ে দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।এই আত্মত্যাগের মহত্ত্ব ও তাৎপর্য তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর(মাউশি) দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতৃপক্ষকে স্মরণ সভার নির্দেশ দেন। কিন্তু কয়রায় বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে কোটায় নিয়োগ প্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকরা সেই নির্দেশনা পালন করে নি। এটা এক ধরনের ধৃষ্টতা প্রদর্শন বলে মনে করছি। আমরা এ ব্যাপারে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি, তা না হলে ছাত্র সমাজ এর সঠিক জবাব দিতে প্রস্তুত আছে।
গত ২৩ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এক চিঠিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত জুলাই-আগস্ট মাসে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের নামে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্মরণ সভার করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেও বলা হয়।
কয়রা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এ অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যবস্থা নিতে সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সব কলেজের অধ্যক্ষ সহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি পাঠানো হয়েছিল । কিন্তু অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেই নির্দেশনা মানা হয় নি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের(মাউশি) নির্দেশনা মানা হয়নি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কি না ? এমন প্রশ্নে তিনি কোন উত্তর দেন নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কয়রা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা রুলি বিশ্বাস বলেন, শিক্ষা প্রশাসনের নির্দেশনা পালন না করে থাকলে সেটা অপরাধ। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
আর কে-০৩







