Saturday, December 6, 2025

ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে যাচ্ছেন রাজাপুরের জব্বার(ভিডিও)

যশোর সদর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের এক যুবককে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে যাচ্ছেন রাজাপুরের আলোচিত জব্বার। পূর্বশত্রুতার জের ধরে ফাঁসাতে এক যুবকের প্যান্টের পকেটে নিজেই ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন জব্বার। এরপর পুলিশ ডেকে রোহানকে ধরিয়ে দিয়ে নিজে হয়েছেন মামলার সাক্ষী। জব্বারের সাজানো এ নাটক ধরা পড়েছে ঘটনাস্থলের পাশের একটি প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এ ঘটনায় পুলিশ আসামিকে আটক করে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী জেলা জজ আদালতে আসামির জামিন আবেদন করেন। রোববার জামিন শুনানির নির্ধারিত দিনে আসামিপক্ষের আইনজীবী ওই ভিডিও আদালতে উপস্থাপন করেন। এরপর বিষয়টি বিচারকের নজরে আসে। জেলা ও দায়রা জজ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক বাদী ও সাক্ষীকে হাজিরের নির্দেশ দিয়ে আগামী ১৩ ডিসেম্বর মামলার জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মাহমুদ কবীর কাকন।
গত ২০ নভেম্বর যশোর শহরের পালবাড়ি এলাকা থেকে ৩৫ পিছ ইয়াবাসহ রাফিউল হাসান রোহান নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। তিনি সদর উপজেলার ইছালী ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের হাসান আলীর ছেলে। মামলার বাদী কসবা ফাঁড়ির এএসআই উজ্জ্বল এজাহারে উল্লেখ করেন, শুক্রবার রাত সাতটা পাঁচ মিনিটে যশোর ইনস্টিটিউট অব নার্সিং সাইন্স এন্ড মিউওয়াইফারি মার্কেটের নীচতলা থেকে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার প্যান্টের সামনের ডানপাশের পকেট থেকে ৩৫ পিছ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ মামলায় সাক্ষী করা হয় রাজাপুর গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদিনের ছেলে আলোচিত জব্বারকে। এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এসময় কসবা ফাঁড়ির এসআই শহিদুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, জব্বার সাদা পাঞ্জাবি পরে ওই বিল্ডিংয়ের নীচতলায় দাঁড়িয়ে ছিল। পাশেই ছিলেন রোহান। বারবার জব্বার কথার ছলে রোহানের পকেটে হাত ঢোকানোর চেষ্টা করে বলে ভিডিওতে দেখা যায়। কিন্তু সুযোগ পায়নি সে। এরপর সে বারবার তার মোবাইল ফোন চাপে আর রোহানকে কী যেন বোঝানোর চেষ্টা করে। এসময় হঠাৎ করে পুলিশ আসে। ঠিক তখনই জব্বার, রোহানের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। পরে রোহানকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। রোহানের পরিবারের সদস্য ও এলাকার বলছেন, মাদকের সাথে রোহানের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই। তার নামে নেই কোনো মামলা। জব্বারই মূলত মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। তার একটি সন্ত্রাসী গ্রুপও রয়েছে। তাদের ভয়ে এলাকার মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায় না। জব্বারই বিভিন্ন সময় রোহানকে ডেকে নিয়ে নানা ধরনের অন্যায় কাজ করার জন্য বলতো। রোহান তাতে রাজি না হওয়ায় জব্বার তাকে ফাঁসিয়ে দেয়। তারা আরও বলেন, জব্বারের সাথে কয়েকজন পুলিশ সদস্যের দহরম মহরম সম্পর্ক রয়েছে। এ ধরনের কাজ প্রায়ই সে করে থাকে। শুধু তাই না, মামলা করিয়ে মীমাংসার কথা বলেও হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। মার্কেটের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের পর সব সত্য উঠে এসেছে।
এ বিষয়ে রোহানের মামা জাহিদ হাসান জলিল জানান, ভিডিও ফুটেজে জব্বারের নাটক উঠে এসেছে। সেটি তারা আদালতে উপস্থাপন করেছেন। আদালত আগামী ১৩ ডিসেম্বর জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন। তিনি বিষয়টির তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

বিশেষ প্রতিনিধি

(ভিডিও দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন)

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর