Friday, December 5, 2025

প্রধান শিক্ষক মুজিবরের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ দুই মামলা

মণিরামপুরের বাঙালিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের নামে চলছে যথেচ্ছা। খোদ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যের কাছ থেকে ঘুষ বাণিজ্য করেছেন প্রধান শিক্ষক মুজিবর রহমান।অভিভাবক সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে সাগর হোসেনকে চাকরি দেয়ার নামে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।

এ ব্যাপারে আদালতে দুটি মামলা হয়েছে। ঘটনা নিয়ে এলাকায় তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রধান শিক্ষক। দ্রুত তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা।

মামলা ও অভিযোগ থেকে তথ্য মিলেছে, ২০২২ সালের ১৪ মার্চ বাঙালিপুর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির আলোচনা সাপেক্ষে অফিস সহায়ক, আয়া ও পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে নিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। আলোচনায় সরকারি বিধি মোতাবেক উপরে উল্লেখিত ওই ৩টি পদে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষক মুজিবর রহমান ঘুষ বাণিজ্যের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সাথে দর কসাকসি শুরু করেন। মুজিবর রহমান উপজেলার গোবিন্দপুরের মৃত নওসের ফকিরের ছেলে।

অবস্থা এতটাই বেগতিক প্রধান শিক্ষক কার্যনির্বাহী কমিটির অভিভাবক সদস্য বাঙালিপুরের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে সাগর হোসেনকে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে নিয়োগ দেয়ার নামে ৭ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এসময় মুজিবর রহমান এই চুক্তির ঘটনা গোপন রাখতে বলেন যাতে অন্য কেউ জানতে না পারেন।

এই চাকরি দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক মুজিবর রহমান প্রাথমিকভাবে ২ লাখ টাকা গ্রহণ করেন আব্দুল কুদ্দুসের কাছ থেকে। প্রধান শিক্ষক মুজিবর রহমান ঘুষের বাকি টাকা নিয়োগ বোর্ডের এক সপ্তাহ আগে পরিশোধ করতে বলেন।

কিন্তু পরবর্তীতে সাগর হোসনকে চাকরি না দেয়ায় এবং সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। বিভিন্ন অজুহাতে ঘোরাতে থাকেন। টাকা ফেরত চাইলে ফেরত দিতে অস্বীকার করেন এবং অভিভাবক সদস্য আব্দুল কুদ্দুসকে নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বলেন টাকা চাওয়ার সাধ মিটিয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন।

ঘুষ বাণিজ্য, প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের দায়ে আব্দুল কুদ্দুস বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মণিরামপুর আমলী আদালতে মামলা করেন ওই বছরের ১৮ অক্টোবর। ওই সিআর মামলা নাম্বার ৮৯৭/২২। বিজ্ঞ আদালত তদন্তের জন্য যশোর জেলা ডিবিকে তদন্তের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।

এসময় আটক এড়াতে এবং ঘটনা ধামাচাপ দিতে নয়া কৌশল নেন প্রধান শিক্ষক মুজিবর রহমান। তিনি আব্দুল কুদ্দুসকে নতুন করে প্রলোভন দেখান চাকরি সাগর হোসেনকেই দেবেন। আর অভিযোগ ও মামলা তুলে নেয়ার জন্য বলেন এবং আরো ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন মুজিবর রহমান। নতুন করে টাকা নিলেও আবারো বিভিন্নভাবে ঘোরাতে থাকেন।

এ ঘটনায় গত ৬ জুলাই ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধান শিক্ষক মুজিবরের কাছে টাকা ফেরত দাবি করেন আব্দুল কুদ্দুস। এসময় মুজিবর জানিয়ে দেন টাকাও ফেরত দেবেন না, আর চাকরিও দিতে পারবেন না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে খুন জখম করবেন। আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মেয়ে কোনো স্কুলে পড়তে পারবে না এমন পরিবেশ তৈরি করবেন। এলাকার আব্দুল্লাহ মোড়ল, সাগর হোসেন, সুফিয়া খাতুন ও আবু সাঈদসহ অনেকে অবগত রয়েছেন বলেও মামলায় বলা হয়েছে।

এসব ঘটনায় আব্দুল কুদ্দুস এবার থানায় অভিযোগ করেন। পরে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ অভিযোগ তুলে থানায় আরো একটি মামলা করেছেন। একই সাথে ন্যায় বিচার দাবি করেছেন।

 

 

রাতদিন সংবাদ

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর