যশোর চুড়িপট্টিতে নয়ন দের সাথে প্রিয়ন্তীর বিয়ে হয় গত বছরের ১৩ জুলাই। কিন্তু বিবাহ বার্ষিকী উদযাপনের বদলে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন এই নববধূ। গতকাল তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে বিষখাওয়া রোগী হিসেবে ভর্তি করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
আজ রোববার (১৪ জুলাই) সকাল ৯টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুকোলে ঢলে পড়েন প্রিয়ন্তী। এরআগে ১৩ জুলাই বিকেল ৩টা ৩৮ মিনিটে মুক্তি দত্ত তার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন আজ আমার জীবনের অংশ প্রিয়ন্তীর বিয়ের একবছর পূর্ণ হলো, শ্বশুর বাড়ির মানসিক-শারীরিক নির্যাতন বিয়ের পর থেকে্, এই পোস্ট করার রাতেই প্রিয়ন্তীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্বজনদের অভিযোগ রাতে এই ঘটনা ঘটলেও আমাদের খবর দেয়া হয়নি। আজ যখন মারা গেছে, তখন বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে তারা খবর দেয়।
পুরো ঘটনাটি রহস্যজনক এবং এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে প্রিয়ন্তীর স্বজনরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। ঘটনার পর নিহতের স্বামী অভিযুক্ত নয়ন দে পালিয়ে গেছেন।
নিহত প্রিয়ন্তী খুলনার রুপসা উপজেলার তালিমপুর গ্রামের দিলীপ দের মেয়ে।
আজ রোববার (১৪ জুলাই) মৃত্যুর পর প্রিয়ন্তীর বাপের বাড়ি খুলনার রুপসা উপজেলার তালিমপুর গ্রামে খবর পাঠানো হয় প্রিয়ন্তী অসুস্থ্য হয়ে মারা গেছে। খবর পেয়ে ছুঁটে আসেন বাবা-কাকা, মা-মাসি ও বোনসহ স্বজনরা। তাদের অভিযোগ প্রিয়ন্তী বিয়ের পর থেকে অশান্তিতে ছিল। তাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো জামাই নয়ন দে ও তার মা।
আমরা গরীব উল্লেখ করে প্রিয়ন্তীর বাবা বলেন-নয়নের পরিবার আমার মেয়েকে বাঁচতে দিলো না। প্রিয়ন্তীর মা-মাসিমা ও বোনসহ স্বজনদের অভিযোগ জামাই নয়ন দে অন্য মেয়ের সাথে পরকীয়ায় মত্ত হয়ে আছে। সে কারণে পথের কাটা সরিয়ে দিলো বিষ খাইয়ে দিয়ে।
তারা বিষপানে আত্মহত্যার প্রচার যেমন দিয়েছেন, তেমনি দুই লক্ষ টাকাই রফা করার প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে হতভাগী প্রিয়ন্তীর বাপের বাড়ির পরিবারকে। এ কাজে মধ্যস্থতার চেস্টা করছেন উভয়পক্ষের আত্মীয় পরিচয়দানকারী যাটোর্ধ এক ব্যক্তি। গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি বলেন-নিজেরা নিজেরা কেস-মেস করে লাভ নেই। তাই নিস্পত্তির চেষ্টা করছি। নিজেরা নিজেরা বলে একজন নববধূকে হত্যা করবে আর তা টাকায় রফা করতে হবে কেন ? সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে সটকে পড়েন ওই বৃদ্ধ।
পরে নিস্পত্তির চেষ্টা হালে পানি পায়নি। ময়না তদন্ত করতে লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে মেয়ের কাকা বলেন-ঈশ্বর আমাদের অনেক দিয়েছে। মেয়ের লাশ বেচে খাবো না।
হত্যায় জড়িতদের দ্রুত আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে যদ্দুর যেতে হয়, যাবো-বলেন প্রিয়ন্তীর শোকাহত কাকা। বাবা-মা, মাসি ও বোনসহ স্বজনরাও একই দাবি করেছেন।
কোতয়ালি পুলিশ জানিয়েছে-আমরা খবর পেয়েছি। লাশ মর্গে রয়েছে। অভিযোগ দিলে দ্রুতই অভিযুক্তদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।
রাতদিন সংবাদ/আর আই







