Saturday, December 6, 2025

মণিরামপুরে প্রতিবন্ধীর ভাতার টাকা নেয়ার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

শফিয়ার রহমান, মনিরামপুর প্রতিনিধিঃ প্রতিবন্ধীদের ভাতার টাকা নেয়ায় অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম জিন্নাহ বিরুদ্ধে। রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।

সূত্রে জানা যায়, মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নে চলতি বছরে ১৩৩ জন প্রতিবন্ধীর নাম ভাতার তালিকায় যুক্ত হয়। সম্প্রতি তাঁদের ব্যাংক এশিয়ার হিসাব নম্বরে ১০-১২ হাজার টাকা যুক্ত হয়েছে। কিন্তু গত বুধবার (৫ জুন) আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে বই ও টাকা আনতে পরিষদে যান উপকারভোগীরা। পরিষদের একটি কক্ষে ছাপ নেওয়া ও টাকা দেওয়ার কাজে ৪ জন লোক নিযুক্ত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দুজন ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তা। তাঁরা আঙুলের ছাপ নিয়ে টাকার জন্য পাশের টেবিলে তাঁদেরই ব্যাংকের নিয়োজিত স্থানীয় প্রতিনিধি সৌরভ বিশ্বাসের কাছে পাঠান। সৌরভ ব্যাংকের কাজের পাশাপাশি খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে আউটসোর্সিং এ কাজও করেন। তিনি ভাতার বইতে টাকার অঙ্ক তুলে স্বাক্ষর দিয়ে টাকা ভাতাভোগীর হাতে না দিয়ে পাশের টেবিলের পরিষদের এক নারী কর্মীর হাতে দেন। সেখান থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেটে নিয়ে ভাতাভোগীর হাতে ৮ হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়।

এদিকে, আঙ্গুলের ছাপের নামে টাকা কেটে রাখার ভিডিও ধারন করেন জনৈক আমির হোসেন নামে এক যুবক। বিষয়টি টের পেয়ে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ। এক পর্যায়ে ওই যুবক চেয়ারম্যানের কাছে লাঞ্চিত হন। ঘটনার পরপরই আমির হোসেন ঘটনার দিনে মণিরামপুর উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে মৌখিত অভিযোগ করেন। এরপর ০৯ জুন রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করেন।
উপকারভোগী কাশিপুর গ্রামের এমদাদ হোসেন, সাইদুল ইসলাম ও শিরিনা খাতুন জানান, তাঁদের বইতে ১০ হাজার ১০০ টাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু হাতে পেয়েছেন ৮ হাজার ৫০০ টাকা। বাকি টাকা ওই রুম থেকে কেটে রাখা হয়েছে। কারণ জানতে চাইলে বলেছেন, এই টাকা অফিস খরচ। সবার থেকে একইভাবে টাকা কেটে নিচ্ছিলেন।

অভিযোগকারি আমির হোসেন জানান, আমার বাবা-মা দুজনের নাম প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে। সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে তাঁদের হিসাব নম্বরে ১০ হাজার ১০০ টাকা ঢুকেছে। খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে ভাতার বই ও টাকা দেওয়ার খবর পেয়ে বুধবার সকালে পরিষদে টাকা তুলতে যান তাঁরা। দুপুরে আমি পরিষদে যাই। সেখানে গিয়ে শুনতে পাই ব্যাংক এশিয়ার এজেন্টের মাধ্যমে চেয়ারম্যান প্রত্যেক উপকারভোগীর কাছ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেটে রাখছেন। আমি টাকা নেওয়ার ঘটনার ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করতে কক্ষে ঢুকি। টের পেয়ে ওই কক্ষের দায়িত্বরতরা কাজ রেখে দৌড়ে চেয়ারম্যানের কক্ষে যান। এরপর চেয়ারম্যান এসে আমাকে লাঞ্ছিত করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রোকনুজ্জামান বলেন, খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম জিন্নাহ’র বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ হয়েছে। তবে ইউএনও স্যার বাইরে থাকার কারণে স্যারের সাথে পরামর্শ করতে পারেনি। এ বিষয়ে স্যারের সাথে পরামর্শ করে তদন্তর ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন জানান, আমি বাইরে ছিলাম অভিযোগের ব্যাপারে আমি এখনো অবগত নই।

আর কে-১০

 

 

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর