নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝিনাইদাহ হরিনাকুন্ডুর চরপাড়া গ্রামের মেয়ে রেহেনা হত্যা মামলায় আটক নয়ন বিশ্বাস স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দিয়েছে। বিয়ে করতে চাপ দেয়ায় পরিকল্পিত ভাবে রেহানাকে হত্যা হয়। এ হত্যাকান্ডের সাথে তারা দুইজন জড়িত বলে জানিয়েছে নযন বিশ্বাস। মঙ্গলবার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দীন হোসাইন আসামির এ জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। নয়ন বিশ্বাস নড়াইল সদরের সিঙ্গিয়া গ্রামের আবুল কালমের ছেলে। এ হত্যার সাথে জড়িত অপর দুই আসামি এমদাদুল ও মিন্টু গাজীকে আগেই আটক করা হয়েছে।
নয়ন বিশ্বাস জানিয়েছে, রেহেনা তার চাচাত ভাইয়ে স্ত্রী ছিল। ভাইয়ের মানসিক সমস্য হলে রেহেনা তাকে ছেড়ে চলে যায়। এরপর নয়নের সাথে রেহেনার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রেহেনার টাকায় নয়ন বিদেশে যায়। দীর্ঘ কয়েক বছর বিদেশে থাকার পর নযন বাড়ি আসে। নয়নকে রেহেনা বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এরমধ্যে নয়ন জনতে পারে রেহেনার অন্যের সাথে প্রেম আছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। রেহেনাকে বিয়ে করবেনা বলে নয়ন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। চলতি বছরের ২০ মার্চ নয়ন তার মামা ইমাদুলকে সাথে নিয়ে ফুফাতো ভাই মিন্টুর ইঞ্জিন চালিত ভ্যান নিয়ে মাগুরার আড়পাড়া যায়। নয়ন ফোন করলে রেহেনা আড়পাড়া বাজারে আসে। এরপর তারা ভ্যানে করে বাঘারপাড়ার বালিয়াডাঙ্গি বাজারে যেয়ে নেমে যায়। কিছুদুর যাওয়ায় পর পরিকল্পনা অনুযায়ী নয়ন গলা চেপে ধরে রেহেনার। এরপর তারা ধরাধরি করে রেহেনার গলা কেটে হত্যার পর লাশ ফেলে পালিয়ে যায়।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ঝিনাইদাহ হরিনাকুন্ডু থানার চরপাড়া গ্রামের মফিজুল ইসলামে মেয়ে রেহেনার ১০ বছর আগে নড়াইল সদরের সিঙ্গিয়া গ্রামের মিরাজের সাথে বিয়ে হয়। মিরাজের মানসিক সমস্যা হলে রেহেনা তার পিতার বাড়ি চরে যায়। এরমধ্যে রেহেনার চাচাত দেবর নয়নের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রেহেনা চাকরি নিয়ে লেবালনে চলে যায়। তার উপার্জিত টাকা দিয়ে নয়নকে মালয়েশিয়া পাঠায়। নয়ন চলতি বছরের ২ মার্চ দেশে ফিরে আসে। নয়ন গাজীপুরের রেহানার ভাড়া বাসায় ওঠে। পরদিন নয়ন বাড়িতে চলে আসে। ২১ মার্চ বিবেলে রেহেনা ঢাকা থেকে মাগুরার আড়পাড়া বাজারে এসে নামে। এরপর নয়ন ও তার সহযোগীরা রেহেনাকে ভ্যানে করে বাঘারপাড়ার আরজি বল্লামমুখ গ্রামের বালিয়াডাঙ্গা-বামনহাটির কাঁচা রাস্তায় নিয়ে যায়। এরপর নয়ন রেহেনাকে ভ্যান থেকে নামিয়ে গলা চেপে ধরে কাছে থাকা চাকু দিয়ে জবাই করে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে রাস্তার পাশের একটি জমিতে নারীর গলাটাকা লাশ দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়। দুপুরে পুলিশের ফোন পেয়ে থানায় যেয়ে স্বজনেরা রেহেনার লাশ সনাক্ত করে। এ ব্যাপারে নিহতে মা শাহিদা বেগম বাদী হয়ে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে বাঘারপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব পায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক আব্দুস সালাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাগুরার নহাটা বাজার থেকে নয়ন বিশ্বাসকে আটক করেন। গতকাল তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ওই জবানবন্দি দিয়েছে।