Saturday, December 6, 2025

স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক জানতে পেরে বন্ধু তৌফিককে খুন

ঝিকরগাছায় নিহত তৌফিক আর খুনি বাবু ছিলেন দুই বন্ধু। তারা সব সময় এক সাথেই থাকতেন। এমনকি মাঝেমধ্যে এক সাথেও ঘুমাতেন। প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে তৌফিককে। কিন্তু তৌফিক বিশ্বাসঘাতকতা করে বাবুর স্ত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এই সম্পর্ক তারা অন্য পর্যায়েও নিয়েছেন। এ কথা তাদের কাছ থেকে শুনেই ঘরে থাকা চাকু দিয়ে তৌফিককে আঘাত করে পালিয়ে যান বাবু।
পিবিআই সদস্যদের হাতে আটকের পর এসব কথা জানিয়েছেন তৌফিকের খুনি ভ্যানচালক কেসমত ওরফে ক্যাসেট বাবু ওরফে বাবু। এছাড়া, সোমবার তিনি আদালতে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। বিচারক তার জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
পিবিআই ও আদালত সূত্র জানায়, যশোরের ঝিকরগাছার কাটাখাল গ্রামের শ্রমিক নিহত তৌফিক হোসেন আর বাবু দুজনেই ভালো বন্ধু ছিলেন। গত শনিরার সন্ধ্যারাতে বাবু বাড়িতে এসে দেখেন ঘরের লাইট সব বন্ধ। স্ত্রী রিয়াকে ডাকাডাকি করেও পাননা তিনি। একপর্যায়ে বাবু যান রান্নাঘরে। সেখানে দেখেন স্ত্রী ও প্রিয়বন্ধু তৌফিক আপত্তিকর অবস্থায় রয়েছেন। হতবাক হয়ে যান বাবু। রান্না ঘরে পাতা নিতে এসেছিলেন বলে বাড়িতে চলে যান তৌফিক। রাতে এ নিয়ে বাবু ও রিয়ার সাথে ঝগড়া হয়। বাবু মারপিটও করেন স্ত্রীকে।
পরের দিন সকালে বন্ধু তৌফিককে ডেকে আনেন। স্থানীয় এক নারী কোরআন শরীফ নিয়ে আসেন। বাবু তার স্ত্রী রিয়া ও তৌফিককে ছুয়ে কি হয়েছে তার বর্ণনা দিতে বলেন। একপর্যায়ে তারা দুজনেই তাদের প্রেম ও শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। যা শুনেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন বাবু। বাড়িতে থাকা চাকু দিয়ে তিনি তৌফিককে আঘাত করে পালিয়ে যান। স্থানীয়রা তৌফিককে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তৌফিককে মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় নিহতের পিতা শাহাদত হোসেন বাদী হয়ে ঝিকরগাছা থানায় মামলা করেন।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই স্নেহাশীষ দাশ তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় অবস্থান শনাক্ত করেন। পরে পিবিআই পরিদর্শক তৈয়বুর রহমান, এসআই স্নেহাশীষ ও এসআই নুর জামালের সমন্বয়ে একটি টিম ফেনি জেলার দৌলতখান থানা পুলিশের সহযোগিতায় বাবুর খালাবাড়ি থেকে তাকে আটক করে। সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অবন্তিকা রায় আসামির জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই স্নেহাশীষ দাশ বলেন, বাবু নিজেই তার অপরাধের বিষয়টি আদালতে স্বীকার করেছেন। এছাড়া এ মামলার অপর আসামি রিয়াকে খোঁজা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তাকে ধরতে বেশ কয়েকটি অভিযানও চালানো হয়েছে। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। রিয়াকে ধরতে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

বিশেষ প্রতিনিধি

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর