Saturday, December 6, 2025

যশোর বোর্ডে এইচএসসিতে ভয়াবহ ফল বিপর্যয়

যশোর শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গত বছরের তুলনায় পাশের হার কমেছে ১৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ কমেছে সাড়ে ১০ হাজারের অধিক। কমেছে শতভাগ পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। সেইসাথে বেড়েছে শূণ্য পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

ফলাফলে দেখা যায়, মোট ১ লাখ ৯ হাজার ৬৩৪ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ৪ হাজার ২৭৭ জন (৬৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ) পাশ করেছে। গত বছর পাশের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮ হাজার ১২৩ জন। গত বছর ছিল ১৮ হাজার ৭০৩ জন। অর্থাৎ জিপিএ-৫ কমেছে ১০ হাজার ৫৮০ জন।

শতভাগ পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১০এ। গত বছর ছিল ৩৯ টি। শূণ্য পাশের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬ থেকে ৭ এ উন্নীত হয়েছে।

বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহীন আহম্মদ বলেন, করোনা মহামারীসহ বিভিন্ন দূর্যোগের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান প্রক্রিয়া ব্যহত হয়। যে কারণে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে সেইভাবে প্রস্তুত করতে পারেনি। তাছাড়া , ইংরেজি ও উচ্চতর গণিতের প্রশ্ন কঠিন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ফলাফল খারাপ হয়েছে। এ দুটি বিষয়ের পাশের হার কম হওয়ায় বোর্ডের গড় পাশের হারের উপরে প্রভাব পড়েছে।

ধারাবাহিক ফল বিপর্যয়ের বিষয়টি সামনে আনা হলেও এ বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দেননি। তিনি বলেন, আমাদের কাজ পরীক্ষা গ্রহণ করা। ফলাফল ভালো বা খারাপ হবে তা শিক্ষার্থীদের উপর নির্ভর করে। তবে আমরা করোনার পূর্ববর্তী সময়ের কাছাকাছি ফলাফল অর্জন করেছি।

করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের উপর বিশেষ নজর রাখার প্রয়োজনীয়তা ছিলো কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে সবসময় সমন্বয় করে কাজ করেছি। আমাদের পক্ষ থেকে তেমন কোন গাফিলতি ছিলো না। তাছাড়া এবছর যশোর বোর্ডের শিক্ষকদের প্রস্তুতকৃত প্রশ্নের পরিবর্তে অন্য বোর্ডের প্রশ্নে পরীক্ষা গ্রহণ হয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীরা কিছুটা চাপ অনুভব করেছে। ফলে তারও একটি প্রভাব ফলাফলের উপর পড়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, দুই বছরের পরিবর্তে প্রস্তুতির জন্য মাত্র দেড় বছর সময় পাওয়ায় পরীক্ষা নিয়ে বেশ চাপে ছিলো তারা। তবে আজ আশানুরূপ ফল পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে কৃতকার্য শিক্ষার্থীরা।

ডা. আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন বলেন, আমাদের পরীক্ষার্থী ছিলো ৫৮৪ জন। পাশ করেছে ৪৫৮ জন। পাশের হার ৮৯ শতাংশ। আমাদের সার্বিক ফলাফলে আমরা সন্তষ্ট। যদিও বোর্ডের পাশের হার এবছর খুবই কম। এটা আমাদের প্রত্যাশিত ছিলো না। ছেলে মেয়েরা প্রস্তুতির সময় কম পেয়েছে। যার কারনে বোর্ডের পাশের হার কমে গেছে।

যশোর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অমল কুমার বিশ^াস বলেন, আমাদের কলেজ ভালো রেজাল্ট করেছে। গতবারের থেকেও আমাদের রেজাল্ট ভালো।

এদিকে ফল বিপর্যয়ের বিষয়ে শিক্ষাবিদরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হবে।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর