যশোরের মনিরামপুরের টেংরামারী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাস চন্দ্র ফেল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে তাদের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সুযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক ১১ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বোর্ড নির্ধারিত টাকার বাইরে অতিরিক্ত ২২ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়েছেন।
নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া ১১ শিক্ষার্থীর অভিযোগ, তারা প্রধান শিক্ষককে বলেছিলেন পরীক্ষার সুযোগ দিলে সামনের ৩ মাস ভাল লেখাপড়া করবেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কোনভাবে তাদের ফরম পূরণ করতে রাজি হচ্ছিলেন না। এক পর্যায়ে তাদের কাছে বাড়তি দুই হাজার টাকা করে দাবি করেন তিনি। উপায় না পেয়ে বাবার সামর্থ না থাকলেও তারা প্রধান শিক্ষকের চাহিদামত টাকা দিয়েছেন। পরে তিনি তাদের ফি জমা নিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য: প্রধান শিক্ষক প্রভাস চন্দ্র সাংবাদিকদের কাছে তার প্রতিষ্ঠানের ৩৫ জন নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার দাবি করেছেন। একপর্যায়ে ১১ জন অকৃতকার্য হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, ওরা এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। বাড়তি ১৮৫০ টাকা কমিটির সিদ্ধান্তে নেওয়া হয়েছে।
পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির বক্তব্য: বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বিনোদ রায় ফেল ১১ জনের কাছ থেকে এক হাজার ৮৫০ টাকা করে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ২১ জন না ১১ জন ফেল করেছে। আমরা তাদের কাছ থেকে এক হাজার ৮৫০ টাকা জামানত হিসেবে নিয়েছি। একপর্যায়ে সভাপতি আরো বলেন, আমি এক হাজার টাকা করে নিতে বলেছিলাম। স্কুল দুই হাজার টাকা করে নিয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য: উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য: জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছে। ঘটনা খতিয়ে দেখব।
শিক্ষক সমিতির সভাপতির ক্ষমতার অপব্যবহার: খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেংরামারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাস চন্দ্র উপজেলার একটি শিক্ষক সমিতির সভাপতি। সেই সুবাদে তিনি জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। ক্ষমতা দেখিয়ে ঠিকঠাক বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেন না। এই পদকে কাজে লাগিয়ে প্রভাস চন্দ্র নিয়মিত নানা অজুহাতে আগেভাগে স্কুল থেকে চলে যান। তিনি ঠিকমত প্রতিষ্ঠানে না থাকায় বিদ্যালয়টির পড়ালেখার মান ভেঙ্গে পড়েছে।
শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত: ফেল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলছেন, তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।







