কপিলমুনি (খুলনা) প্রতিনিধি ঃ স্বামীর ভিটায় যে পথে বউ সেজে প্রবেশ করেছেন পাঁচযুগ আগে, সেই পথ আটকে দিয়েছে শরিকেরা। জীবনের হুমকি আর চোখ রাঙানিতে কাটছে তার প্রতিটি প্রহর। এই বয়সে কপিলমুনির শতবর্ষী রেনুকা মন্ডল মৃত্যুর পর তার লাশের সৎকার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন।
কারণ তাদের ৭ থেকে ৮ যুগ ধরে চলাচলরত রাস্তাটি ইটের খাড়ি দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষ শরীক ভদেব গং। জীবনের শেষ মুহুর্তে দাঁড়িয়ে তিনি বর্তমান সমাজ ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন।
তিনি তো বর্তমান সমাজের কাছ থেকে কখনও এমনটি আশা করেননি। তাই তিনি আবারও ফিরতে চান অতীতের সোনালী দিন গুলোতে। এমন আক্ষেপের সুরে কথা বলতে বলতে তার ছানা পড়া দুটি চোখ দিয়ে অঝরে জল ঝরতে থাকে। তার জীবনে এমন একটি দিন দেখতে হবে তা তিনি কখনও আশা করেননি। এমন অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি
ইউনিয়নের কাশিমনগর গ্রামে। খবরের সন্ধানে ওই বাড়ীতে সরেজমিনে হাজির হলে রেনুকা মন্ডল তার বেকুলতা আর্তির বিষয়টি এ প্রতিবেদকের কাছে তুলে ধরেন।
এক পর্যায়ে তিনি তার বাড়ীর পারিপার্শ্বিক অবস্থান ও চলাচলের বন্ধ রাস্তাটি ঘুরে দেখান। জানাগেছে, রেনুকা মন্ডলের স্বামী মৃত বিমল কৃষ্ণ মন্ডল ও মৃত অমল মন্ডলের পুত্র ভূদেব মন্ডল গং একই শরীকদ্বয়। উভয়ে পূর্ব পুরুষ থেকে একই খতিয়ানের একই দাগে এজমালিতে বসবাস করে আসছে। তন্মধ্যে ভূদেব গং পূর্ব পুরুষ থেকে বহালরত সকল শরীকগণের চলাচলের রাস্তার সম্মুখ
সমারে বসবাস করছেন। এমতাবস্থায় পরিবারের মধ্যে খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে পূর্বপুরুষ থেকে তাদের চলাচলের রাস্তাটি গায়ের জোরে ইটের খাড়ি দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে রেনুকা মন্ডলসহ অপর শরীক পরিতোষ মন্ডলরা একপ্রকার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। সৃষ্ট বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কওছার আলী জোয়ার্দ্দার সরেজমিনে তদন্ত করে ভক্তভোগীদের অনুকূলে প্রতিবেদন প্রদান করেছেন। আবার বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার বসাবসি করলেও চলাচলের রাস্তাটি অবমুক্ত করণে ভ‚দেব গংদের প্রভাবের কাছে আজও অধরা থেকে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতে শতবর্ষী রেনুকা মন্ডল মৃত্যুর পর তার লাশ সৎকারের বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন। পরিশেষে বিষয়টি নিয়ে তিনি উপজেলা প্রশাসন ও সমাজের বিবেকবান
ব্যক্তিবর্গের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে ভূদেব মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি একটু ব্যস্ত আছি, পরে কথা হবে।
এ বিষয় সম্পর্কে কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কওছার জোয়ার্দ্দার জানান, এ বিষয়ে আমার দপ্তরে অভিযোগ করা হলে আমি সরেজমিনে গিয়ে রেনুকা মন্ডলের রাস্তা বের করে দেওয়ার জন্য ভুদেব গং দের বলেছি। কিন্ত তারা বিষয়টি কোন ভ্রুক্ষেপ করেনি। রেনুকা মন্ডলদের আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি। তবে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধের বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক ও দুঃখজনক।
