Saturday, April 27, 2024

আল্লাহর কাছে চাওয়া বিফলে যায় না

- Advertisement -

বান্দার দুআ ও প্রার্থনা আল্লাহ তাআলার কাছে খুব পছন্দ। আল্লাহ তাআলা চান, বান্দা নিয়মিত তাঁর কাছে দুআ করুক। সকল প্রয়োজন তাঁর কাছেই পেশ করুক। বান্দার এই আল্লাহমুখিতা ও মুখাপেক্ষিতা আল্লাহ তাআলার খুব প্রিয়। এ মর্মেই কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে―

তোমাদের রব বলেছেন, আমাকে ডাক; আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। নিশ্চয়ই যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, ওরা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। -সূরা গাফির : ৬০।

এই আয়াতে ‘আমাকে ডাক’ অর্থ হল, আমার বন্দেগী কর এবং আমার কাছে চাও। -তাফসীরে কাশশাফ : ৪/১৭৫।

‘সাড়া দেব’ অর্থ হল, আমি তোমাদের ইবাদতের প্রতিফল দেব এবং তোমাদের দুআ কবুল করব, তোমাদের চাওয়া পূর্ণ করব। -প্রাগুক্ত।

আয়াতের শেষাংশে বলেছেন, যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে অর্থাৎ সকল ইবাদাত, দুআ ও আল্লাহকে ডাকা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তারা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

নিঃসন্দেহে অন্যান্য ইবাদতের মতো আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে দুআ করা স্বতন্ত্র একটি ইবাদত। বরং আল্লাহর কাছে চাওয়া ও দুআ করাকে হাদীসে ইবাদতের মূল বলা হয়েছে। -সুনানে আবু দাউদ : ১৪৭৯, জামে তিরমিযী : ৩২৪৭।

দুআর ক্ষেত্রে কিছু আদব যেমন আছে, তা কবুল হওয়ার কিছু শর্তও আছে। এ বিষয়ে অনেকগুলো বর্ণনা পাওয়া যায়। যেমন বিখ্যাত সাহাবী আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

আল্লাহ তাআলা বান্দার দুআ কবুল করে থাকেন―যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো গোনাহ কিংবা আত্মীয়তা ছিন্ন করার দুআ না করে এবং দুআ কবুলে তাড়াহুড়ো না করে।

সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, তাড়াহুড়ো কীভাবে হয়? অথবা কাকে তাড়াহুড়ো বলা হয়?

নবীজী বললেন-
বান্দা বলে, আমি তো দুআ করেছি, আমি তো দুআ করেছি; কিন্তু কবুল হতে দেখিনি। তাই সে নিরাশ হয়ে যায় এবং দুআ করা ছেড়ে দেয়। -সহীহ মুসলিম : ২৭৩৫।

অন্য হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

মানুষ যে কোনো দুআ করে, যদি তাতে কোনো গোনাহ কিংবা আত্মীয়তা ছিন্ন করার বিষয় না থাকে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তাকে তিনটি বিষয়ের কোনো একটি দান করেন। হয়তো তৎক্ষণাৎ তার দুআ কবুল করা হয় অথবা তার দুআর ফল আখেরাতের জন্য রেখে দেওয়া হয় কিংবা তাকে কোনো মন্দ বিষয় থেকে হেফাযত করা হয়।
সাহাবায়ে কেরাম বললেন, তাহলে তো আমরা অনেক দুআ করব।
নবীজী বললেন, তাহলে আল্লাহও অনেক দেবেন এবং আল্লাহর দেওয়াই বেশি। -মুসনাদে আহমাদ : ১১১৩৩।

মোটকথা, দুনিয়া ও আখেরাতের যে কোনো প্রয়োজনে মুমিন প্রথমেই আল্লাহ-অভিমুখী হবে। আল্লাহ তাআলার কাছেই নিজের সকল প্রয়োজন পেশ করবে। তাঁর কাছ থেকেই কল্যাণের ফায়সালা গ্রহণ করবে। সেক্ষেত্রে নামায ও দুআর মাধ্যম অবলম্বন করবে। পাশাপাশি সাধ্যের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। মনে রাখবে, আল্লাহ তাআলার কাছে বান্দার দুআ-মুনাজাতের যেমন প্রতিদান রয়েছে, চেষ্টা মেহনতেরও রয়েছে অনেক মূল্য ও প্রতিদান। নিঃসন্দেহে বান্দার যাবতীয় বিষয় আল্লাহ তাআলার হুকুমেই সম্পন্ন হয়ে থাকে।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তার নিকট বেশি বেশি চাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

অনলাইন ডেস্ক

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত