Saturday, April 27, 2024

রোজায় ওষুধ ও খাবার গ্রহণে সতকর্তা

- Advertisement -

ডা. মো. রাশীদ মুজাহিদ- আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিয়মিত রোজা রাখছি। এই রমজানে সুষম খাবার নিশ্চিত করার পাশাপাশি যারা নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন; তাদের নিতে হয় বাড়তি সতর্কতা। কীভাবে খেতে হবে ওষুধ। আজকের আলোচনা সে বিষয়েই—

ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে
প্রথমেই আসে ডায়াবেটিসের কথা। রোজা শুরুর আগেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের উচিত ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধের ডোজ সমন্বয় করে নেওয়া। কেননা অন্য সময়ের তুলনায় এ সময় মুখে খাওয়ার ওষুধ বা ইনসুলিনের ডোজ কিছুটা কমিয়ে আনতে হয়। সকালের ওষুধ ইফতারে আর রাতের ওষুধ সেহরিতে খেতে বলা হয়। ইনসুলিনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। কিছু ইনসুলিন আছে যেগুলো দীর্ঘমেয়াদে কাজ করে, রক্তে সুগারের পরিমাণ কমে যাওয়ার ভয় কম থাকে; এমন ইনসুলিন ডাক্তারের পরামর্শে নেওয়া যেতে পারে।

হৃদরোগের রোগীদের ক্ষেত্রে
ঝুঁকিপূর্ণ বা জটিল হৃদরোগী ছাড়া অন্য হৃদরোগীদের জন্য রোজা বেশ উপকারী। নিয়ম মেনে খেলে এর সাথে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে। ৫০ এর বেশি বয়স্ক রোগী যারা দুর্বল, দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকলে আরও বেশি অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে; তাদের রোজা না থাকাই ভালো। একই সাথে হার্ট ফেইলরের রোগীদেরও রোজা না রাখা উচিত। যে কোনো হৃদরোগী যার অবস্থা জটিল নয় কিন্তু হঠাৎ যদি বুকে ব্যথা বা বেশি খারাপ অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত রোজা ভেঙে ওষুধ খেয়ে নিতে হবে।

কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে
কিডনি রোগ থাকলেই যে রোজা রাখা যাবে না—তা ঠিক নয়। কিডনিতে সমস্যা থাকুক বা না থাকুক প্রত্যেকেরই রোজার সময় পর্যাপ্ত পানি পান নিশ্চিত করতে হবে। আকস্মিক কিডনি রোগে আক্রান্ত, রেনাল ফেইলরের শেষ স্টেজ, ডায়ালাইসিস রোগীদের রোজা না রাখাই ভালো।

অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট রোগীদের ক্ষেত্রে
এ ধরনের রোগীদের প্রশ্ন হচ্ছে ইনহেলার নিতে পারবে কি না। সঠিক নিয়মে ইনহেলার নিলে রোজা ভাঙার ভয় নেই। কারণ ওষুধ সরাসরি রক্তে মিশে গেলে রোজা ভেঙে যায়, কিন্তু ইনহেলারের ক্ষেত্রে তা হওয়ার সুযোগ নেই।

গর্ভাবস্থায় করণীয়
গর্ভকালীন প্রথম ৩ মাস এবং শেষ ৩ মাস রোজা না রাখাই উত্তম। মাঝের ৩ মাসে মা যদি সুস্থ অনুভব করেন এবং তেমন কোনো জটিলতা না থাকে তাহলে রোজা রাখতে পারেন। তবে ইফতার, সেহরি এবং অন্যান্য খাবারে পর্যাপ্ত পুষ্টি, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, খনিজ গ্রহণ এবং পানি পান নিশ্চিত করতে হবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে
খাবারে আঁশের পরিমাণ কম থাকা এবং পানি কম খাওয়ার কারণে অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। এর প্রতিরোধে ইফতারিতে বেশি করে ফলমূল, রাতের ও সেহরিতে শাক-সবজি, সহজপাচ্য খাবার থাকতে হবে। এ ছাড়া ইসবগুলের ভুসি, লাল আটা ও ঢেঁকি ছাটা চালের ভাত খেতে পারলে ভালো। সমস্যা বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

সর্বোপরি একটু সচেতন হয়ে উপরের নিয়মগুলো মেনে চললে আমরা সুস্থ শরীরে রমজানের ইবাদত করতে পারবো।

লেখক: এমবিবিএস, ফ্যামিলি মেডিসিন চিকিৎসক, সেন্টার ফর ক্লিনিক্যাল এক্সিলেন্স অ্যান্ড রিসার্চ, ঢাকা।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত