Saturday, May 4, 2024

শিবনারায়ণ দাশের কর্নিয়ায় পৃথিবীর আলো দেখতে পাচ্ছেন মশিউর ও কালাম

- Advertisement -

জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার শিবনারায়ণ দাশের কর্নিয়ায় পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ পেয়েছেন দুই অন্ধ মানুষ। তাদের একজন রংপুরের মশিউর রহমান, অন্যজন চাঁদপুরের আবুল কালাম। কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের দ্বিতীয় দিনে পৃথিবীর আলো দেখতে পাচ্ছেন তারা। শনিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধানী চক্ষু হাসপাতালে আবুল কালামের অপারেশন করেন ডা. শীশ রহমান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মশিউর রহমানের কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করেন ডা. রাজশ্রী দাস।

এ বিষয়ে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সমন্বয়ক মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা দুই অন্ধ ব্যক্তি বর্তমানে পৃথিবীর আলো দেখতে পাচ্ছেন। তবে পুরোপুরি কার্যকর হতে মাসখানেক সময় লাগবে। বর্তমানে দুজনই সুস্থ আছেন।

জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস

জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস

১৯৮৪ সালে থেকে অন্ধ মানুষরা যেন দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায় তা নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি। এ পর্যন্ত ৩৫১০ জনকে পৃথিবীর আলো দেখতে সাহায্য করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সম্পূর্ণ বিনা খরচে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। নিবন্ধন করে কর্নিয়া প্রতিস্থাপনে আগ্রহী ব্যক্তিরা এ সুবিধা নিতে পারেন।

বর্তমানে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই তিনি এর সঙ্গে জড়িত। তবে সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি কাজে গতি পেয়েছে। বলেন, আমরা চক্ষু ক্যাম্প করি, যেখানে ফ্রিতে চোখের অপারেশন করা হয়। আমাদের কনসালটেন্টরা যন্ত্রপাতি নিয়ে ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করে। অন্যরা যে ক্যাম্প করে তাতে শুধু ডাক্তার দেখানো হয়, কিন্তু সন্ধানীর ক্যাম্পে ডাক্তারের সেবার পাশাপাশি চোখের পরীক্ষা-নিরিক্ষা করা এবং ফ্রি চশমাও দেয়া হয়।

ডা. লিটু আরও বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ক্যাম্পের সংখ্যা আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি হয়েছে। আমাদের পরবর্তী পরিকল্পনা হচ্ছে, স্কুল-কলেজসহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে চক্ষুদানের বিষয়ে মানুষকে উৎসাহিত করা। বাংলাদেশে কয়েক লাখ মানুষের চোখের আলো ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব কর্নিয়া দানের মাধ্যমে। তারা যেন চোখের আলো ফিরে পেয়ে কর্মক্ষম হতে পারে। সেজন্য মানুষকে উৎসাহিত হয়ে চক্ষুদানে এগিয়ে আসা দরকার। সন্ধানীতে রক্ত দিলে প্রয়োজনের সময় আমরা আপনাকেও রক্ত দেবো।

অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু

অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু

তিনি বলেন, সম্প্রতি গাজীপুর ও কুমিল্লার দুজন তাদের ছেলে এবং নাতির জন্য কর্নিয়া দান করে গেছেন। এভাবে মানুষ সচেতন হচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষ চক্ষুদানের বিষয়ে এখনও বেশি আগ্রহী নয়। তাদেরকে আগ্রহী করে তুলতে হবে জনসচেতনতার মাধ্যমে। এত বছরেও আমরা মাত্র চুয়াল্লিশ হাজার চক্ষুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছি।

জানা যায়, মরণোত্তর কর্নিয়া দানের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, অভিনেত্রী সারা যাকের, সুবর্ণা মুস্তাফা, কণ্ঠশিল্পী মেহরীন, কৃষ্ণকলি প্রমুখ।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত