অবশেষে আইনি লড়াইয়ে জিতে “কাঁচা বাদাম” গানের স্বত্ব পেলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের লোকশিল্পী ভুবন বাদ্যকর।
“বাদাম বাদাম দাদা কাঁচা বাদাম, আমার কাছে নাই গো বুবু ভাজা বাদাম…”; নিজের তৈরি এই গানটি নিয়ে ২০২১ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিলেন ভুবন বাদ্যকর।
তার সেই ভাইরাল ভিডিও সারা বিশ্বের কয়েক মিলিয়ন মানুষ দেখেছিলেন। সে সময় ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটকের মতো সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে চোখ মেললেই বেজে উঠতো ফেরিওয়ালার সেই বাদাম বিক্রির গান।
বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের লক্ষ্মীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের কুড়ালজুড়ি গ্রামে তখন কাঁচা বাদামের খোঁজে ভিড় জমতো। কিন্তু আইনি জটিলতা এবং ভুলপথে চালিত হওয়ার কারণে নিজের তৈরি গানের স্বত্ব থেকে বঞ্চিত ছিলেন শিল্পী। এবার তা ঘুচল। সামনে মোটা অঙ্কের টাকাও পাবেন বলে আশা করছেন ভুবন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিন জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর প্রথমবারের মতো ভুবন বাদ্যকরের এই গানের খবরটি সম্প্রচার করা হয়। নিমেষে তা ভাইরাল হয়ে যায়। মানুষের মুখে মুখে ফিরতে থাকে সেই গান। সুযোগ বুঝে ইলামবাজারের গোপাল ঘোষ সে সময় ভুবন বাদ্যকরের কাছে তার গানের কপিরাইট লিখিয়ে নেন। ফলে “কাঁচা বাদাম” গান যারাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করছেন, তাদের অ্যাকাউন্টে কপিরাইট লাগিয়ে টাকা দাবি করছেন গোপাল ঘোষ।
ভুবনের দাবি, সেই টাকার পরিমাণ প্রায় ১৩ কোটি টাকা। এমনকি, ভুবন বাদ্যকর নিজেও সেই গান করার পর তাকেও কপিরাইট দিতে হয়েছে! ফলে বিখ্যাত হয়েও বিপাকে ছিলেন ভুবন।
এনিয়ে বেশ কয়েকবার দুবরাজপুর থানায় ইলামবাজারের গোপাল ঘোষ ও তার “গোধূলিবেলা মিউজিক”-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ভুবন। ভুবন বাদ্যকর অভিযোগ করেছিলেন, বাঁকুড়ার “বেঙ্গল রিমিক্স মিউজিক”-এর সঙ্গে তার প্রথম কপিরাইটের চুক্তি হওয়া সত্বেও তাকে আইপিআরএস অর্থাৎ শিল্পী ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার নাম করে তার কপিরাইটের স্বত্ব লিখিয়ে নিয়েছিলেন গোপাল ঘোষ।
শেষে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কপিরাইট বোর্ডের কাছে ভুবন কপিরাইট ফেরত চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। তার হয়ে লড়াইয়ে নেমেছিল বাঁকুড়ার বেঙ্গল রিমিক্স মিউজিক। একই সঙ্গে কপিরাইটের নাম করে যত টাকা গোপাল ঘোষ তুলে নিয়েছিল সেই টাকা ফেরত পাওয়ার জন্যও অভিযোগ জানানো হয় আদালতে। সেই মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
এর মাঝেই মুম্বাইয়ের কেন্দ্রীয় সরকারের কপিরাইট বোর্ড থেকে “কাঁচা বাদাম” গানের মালিকানার সার্টিফিকেট দেওয়া হলো বাঁকুড়ার ওই মিউজিক সংস্থাকে। আর তাতে হাসি ফুটেছে ভুবন বাদ্যকরের মুখে।
