Thursday, May 9, 2024

এবার দ্বাদশ সংসদে সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন আলোচনায় যশোরের পাঁচ নারী

- Advertisement -

এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে নারী সংসদ নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। আগামীকাল ২ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করবে। যশোর থেকে অন্তত দেড় ডজন নারী নেত্রী দলীয় মনোনয়ন কিনবেন বলে শোনা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে শীর্ষ পাঁচ নেত্রীর নাম জোরেসোরে শোনা যাচ্ছে। আবার এমনও অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে, যারা এই পদের যোগ্য নন।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নতুন মুখই বেশি আসতে পারে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, তাদের দলের হয়ে ৩৫-৪০ জন নারী নতুন করে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হতে পারেন। এর মধ্যে দু-একজনের মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়ার বিষয়েও আলোচনা রয়েছে। মহিলা আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নারীনেত্রী আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয় ও নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন। প্রত্যাশীরা নিজেদের জীবনবৃত্তান্তও নেতাদের কাছে জমা দিচ্ছেন।

জাতীয় সংসদে ৩০০ আসনের বাইরে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে। বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের আসন ২২৩টি। এরপরই স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ৬২ জন। এর মধ্যে ৫৮ জনই আওয়ামী লীগের নেতা-সমর্থক। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের ভাগে পাওয়া সংরক্ষিত আসনগুলোতেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রার্থী দেয়া হবে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের যোগ করলে এবার আওয়ামী লীগের ভাগে পড়বে কমবেশি ৪৭ জন সংরক্ষিত নারী আসন। একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন ৪৩ জন।

সংরক্ষিত সদস্য বাছাই করার সঙ্গে অতীতে যুক্ত ছিলেন, এমন একজন দায়িত্বশীল আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পুরোনোদের মধ্যে বেশির ভাগই বাদ পড়বেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের ভাগ থেকে ১৪ দলের শরিকদের পছন্দের তিন-চারজন নারীকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করার সম্ভাবনা রয়েছে।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সংরক্ষিত নারী আসনে একটা বড় সংখ্যায় মনোনয়ন পান পিতা বা স্বামীর অবদানের কারণে। বিশেষ করে ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালে এমএনএ ছিলেন, এমন নেতাদের পরিবারের সদস্যরা গুরুত্ব পান। ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন এমন পরিবারের সদস্যদেরও সংসদ সদস্য করা হবে। এ ছাড়া ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে দায়িত্ব নেওয়ার পর যাঁদের পাশে পেয়েছিলেন, এমন নারীনেত্রীদের কেউ কেউ জায়গা পাবেন। তাছাড়াও রাজপথে যারা সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন তারাও এই তালিকায় ঠাঁই পেতে পারেন।

তবে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্র বলছে, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনগুলোতে কাকে কাকে সংসদ সদস্য করা যায়, সে বিষয়ে কাজ করছেন। সংরক্ষিত আসনের নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর মন্ত্রিসভায় আরও কিছু নতুন নাম যুক্ত করা হতে পারে।

এসব বিবেচনায় যশোর থেকে যাদের নাম আলোচনায় আসছে, তাদের মধ্যে পাঁচ নেত্রী রয়েছেন আলোচনার শীর্ষে। তারা হলেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দীর্ঘদিন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী নেতা মৃত এডভোকেট শরীফ আব্দুর রাকিবের স্ত্রী সংরক্ষিত আসনে সাবেক সংসদ সদস্য আলেয়া আফরোজ, দীর্ঘদিনের পরীক্ষীত রাজনীতিক সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রওশন জাহান সাথী, যশোরের রাজপথের দীর্ঘদিনের পরীক্ষীত নেত্রী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় মহিলা সংস্থার সাবেক চেয়ারম্যান লাইজু জামান, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের স্ত্রী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নাসরিন সুলতানা খুশী ও যশোরের মেয়ে ও বর্তমান সাতক্ষীরার গৃহবধূ রেহ্মুনা জেবীন রাখি। তিনি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শরীফ আব্দুর রাকিবের মেয়ে। বর্তমানে এটিই তার বড় পরিচয় নয়, তিনি আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাবুর স্ত্রী। আসাদুজ্জামান বাবু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচনী কার্যক্রমও শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাবুকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন। সে নির্দেশনায় বাবু লাঙল প্রতীকের পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে বিজয়ী করেন। তার এই ভূমিকা স্মরণে রেখেছেন শেখ হাসিনা। যে কারণে শীর্ষ পাঁচ জনের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন রেহ্মুনা জেবীন রাখি।

উল্লেখ্য, গত সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী আসন ছিল ৪৩টি। এর মধ্যে খাদিজাতুল আনোয়ার, রুমানা আলী, সুলতানা নাদিরা ও তাহমিনা বেগম এবার সরাসরি আসনে জয়ী হয়েছেন। বাকি যে ৩৯ জন আছেন, এর মধ্যে অল্প কয়েকজনকে ফিরিয়ে আনা হতে পারে। বাকি সবাই নতুন হবেন।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সংরক্ষিত নারী আসনে দলের মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। যেমন যাঁরা জোট বা দলের অন্যদের সুযোগ করে দিতে সরাসরি নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন। এ বিবেচনায় রয়েছেন সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এবং দলের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী। তিনি এবার জাতীয় পার্টির কারণে মনোনয়ন পেয়েও নির্বাচন করতে না পারেননি। বিনোদনজগৎ, লেখক ও শিল্পীদের মধ্যে থেকে অন্তত দুজনকে স্থান দেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে লাকী ইনামসহ কয়েকজনের নাম আলোচনায় আছে আওয়ামী লীগে।

 

-বিশেষ প্রতিনিধি

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত