Wednesday, May 8, 2024

যশোরের আদ-দ্বীন হাসপাতালে নবজাতক বদল !

- Advertisement -

‘আমার সুস্থ সন্তান হয়েছিলো। মূহুর্তের মধ্যেই অপারেশন থিয়েটারে সে সন্তান পরিবর্তন করে কোলে তুলে দেয়া হয় প্রতিবন্ধী এক শিশুকে। এ ঘটনার বিচার চাই।’ বলে বুধবার সকালে আদালত চত্তরেই হাউ মাউ করে কাঁদলেন এক বাবা। তাই তিনি আদালতে যশোর আদ-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. শীলা পোদ্দারসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে জানান। একই সাথে তিনি বাচ্চার ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছেন বলেও জানান। বলছিলাম সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে শাহাজালাল সরদারের কথা। তার অভিযোগ আমলে নিয়ে যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঞ্জুরুল ইসলাম অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। অপর দুই আসামি হলেন, শহরের রেল রোডের আদ-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আয়া শহর বানু ও স্টাফ নার্স সুমি।
শাহজালাল সরদারের মামলায় উল্লেখ করেছেন, তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার গর্ভধারণের পর থেকে ডা. হাবিবা সিদ্দিকী ফোয়ারার তত্তাবধানে নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। সন্তান প্রসবের পূর্বে চার বার তার আল্ট্রাসনো করা হয় বিশেষজ্ঞ দিয়ে। এছাড়া গর্ভধারণের পর থেকে চিকিৎসা গ্রহণকালে বাচ্চা ও তার মায়ের কোনো সমস্যা ছিলোনা বলে নিশ্চিত করেন ডা. হাবিবা সিদ্দিকী ফোয়ারা। ৩৮ সপ্তাহ পর যন্ত্রণা শুরু হলে গত ৫ জানুয়ারি সুরাইয়া আক্তারকে আদ-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ডা. শীলা পোদ্দারের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা শুরু করা হয়। এ সময় ডা. শীলা পোদ্দার সিজার করতে হবে বলে মতামত দিলে এতে সম্মত হন শাহজালাল সরদার ও তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার। এরপর একইদিন দুপুরের সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানোর জন্য জন্য সুরাইয়া আক্তারকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢোকানো হয়।
প্রায় এক ঘন্টা পর হাসপাতালের স্টাফ নার্স সুমি অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে একটি বাচ্চা এনে আয়া শহর বানুর হাতে তুলে দেন। পরে আয়া শহর বানু বাইরে অপেক্ষারত অন্য লোকজনের হাতে বাচ্চাটি তুলে দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।  এ ঘটনার ২০ মিনিট পর নার্স সুমি আরেকটি বাচ্চা অপারেশন থিয়েটারের বাইরে এনে বাদি শাহজালাল সরদারের হাতে তুলে দেন। একই সাথে বলেন বাচ্চাটি গুরুতর অসুস্থ। তাকে দ্রুত জরুরি বিভাগে নিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে। এরপর শাহজালাল সরদার বাচ্চাটির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে থাকেন। দুই দিন পর তার সন্দেহ হয়, অপারেশন থিয়েটার থেকেই তার বাচ্চা বদল করে দেয়া হয়েছে। শাহজালাল সরদার ও স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার সন্দেহ করছেন, নার্স সুমি ও আয়া শহর বানু পরস্পর যোগসাজসে বদল করে তার বাচ্চাকে ঝিকরগাছার গদখালীর শিল্পী নামে এক নারীর হাতে তুলে দিয়েছেন। আর অন্যের প্রতিবন্ধী বাচ্চা দেয়া হয়েছে শাহজালাল সরদারকে। এ কারণে বাচ্চার ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছেন শাহজালাল সরদার।
অভিযোগ বিষয়ে ডা. শীলা পোদ্দার বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। শিশুটি জন্ম গ্রহণের ১৫ দিন পর ওই দম্পতি চিকিৎসা নিতে তার কাছে এলে তিনি অর্থপেডিক চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।

বিশেষ প্রতিনিধি

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত