Friday, April 26, 2024

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যশোরের দু’টি সার্কেলের কর্মকর্তা ও সদস্যদের অভিযান নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন !

- Advertisement -

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয় ক সার্কেলে কর্মরত কর্মকর্তা ও সদস্যদের দায়িত্ব নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। পর্যাপ্ত জনবল থাকা সত্বেও এই দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা ও সদস্যরা মাদক কারবারীদের গ্রেফতারে তেমন কোন সফলতা দেখাতে পারছেনা।

বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার সুলতানপুর দক্ষিণ পাড়াস্থ এক মাদক বিক্রেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাত্র দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করে। তবে গাঁজা বিক্রেতা শহর আলীকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তিনি ওই এলাকার মৃত বহর মোল্লার ছেলে। এই দুই সার্কেলের কর্মকর্তা ও সদস্যদের অভিযান নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে কর্মরত নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মচারী জানান, বর্তমানে এই দপ্তরে কর্মরত পরিদর্শক থেকে শুরু করে পর্যাপ্ত উপ-পরিদর্শক ও সহকারী উপ-পরিদর্শক এবং সিপাহী যারা দায়িত্ব পালন করছেন।

অথচ দিনদিন মাদক নিয়ন্ত্রন ও উদ্ধারে তেমন একটি সফলতা আসছেনা। যশোর সদর ও কয়েকটি উপজেলা নিয়ে ক সার্কেল ও বেনাপোল পোর্ট থানাসহ কয়েকটি উপজেলা নিয়ে খ সার্কেল রয়েছে।

প্রতি সার্কেলে একজন করে পরির্দশক ও কয়েকজন উপ-পরিদর্শক ও সহকারী উপ-পরিদর্শক ও সিপাহী দায়িত্ব পালন করছেন।

কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তা যশোর তাদের নির্দিষ্ট সার্কেলের অধীনে যে সব লাইসেন্সধারী মদ বিক্রেতা ও হোমিও প্যাথিক দোকান এবং হার্ডওয়ার দোকান, বেসরকারী প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ঔষধের দোকান রয়েছে।

যশোর ক সার্কেলের অধীনে লাইসেন্সধারী দু’টি মদের দোকান রয়েছে। উক্ত দোকান দু’টির মধ্যে একটি দোকানে সপ্তায় দু’টি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পন্যাগার থেকে যে পরিমান বাংলা মদ দেয়া হয়। সেই মদ বর্তমানে যশোর শহরেরর হরিজন পল্লীতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। যশোর শহরের পুরাতন পৌরসভা,রেলষ্টেশন সংলগ্ন সুইপার পট্টিতে প্যানগার থেকে উত্তোলনকৃত বাংলামদ (দেশীয়) অবাধে বিক্রি করে থাকে। যে পরিমানের মদ উত্তোলন করা হয় তার চেয়ে চারগুন পানি মিশিয়ে ও মদ সেবনকারী অর্থাৎ লাইসেন্সধারীর কাছে বিক্রির কথা থাকলেও বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষের কাছে অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছে বাংলা মদ।

লাইসেন্স বিহীনভাবে দেশীয় বাংলামদ বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া লাইসেন্সধারী মদ উত্তোলনকৃত দোকানগুলির কাছ থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয় ক সার্কেলের পরিদর্শক উপ-পরিচালকের পর অর্থ পেয়ে থাকেন। মাসের প্রথম সপ্তায় দোকান গুলি পরিচালনাকারীদের একজন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয় কর্মরত কর্মকর্তা ও সদস্যদের পর্যায়ক্রমে উৎকোচ দিয়ে খুশি করেন। খুশি না করলে তাদের পক্ষে মদ বেচাকেনা বড় বিপদ হয়ে পড়েন। লাইসেন্সধারী মদের দোকান ছাড়াও যশোর শহর এবং শহরতলীতে অবস্থিত বিভিন্ন হার্ডওয়ারের দোকানে ডিনোচার্ড, বেসরকারী প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ঔষধের দোকান এবং হোমিও প্যাথিক যেখানে মরফিন, প্যাথেডিন ও স্পিরিট বেচাকেনা হয়।

এ সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় মরফিন, প্যাথেডিন, স্পিরিট ও ডিনোচার্ড বেচাকেনার ক্ষেত্রে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি অনুমতি নিতে হয়। যাদের অনুমতি পত্র নেই সে সব দোকান গুলি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয় ক সার্কেল ও খ সার্কেলের কর্মকর্তা এবং সদস্যদের অলিখিত চুক্তি রয়েছে।

যার কারণে এসব প্রতিষ্ঠানে অবাধে প্যাথেডিন,মরফিন,স্পিরিট ও ডিনোচার্ড বেচাকেনা হলেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দুই সার্কেলের কর্মকর্তা ও সদস্যরা কখনও অভিযান চালান না।

যাদের সাথে চুক্তি নেই তাদের দোকান গুলিতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে মালামাল জব্দসহ মাদক আইনে মামলা দেন।

সূত্রগুলো বলেছেন, বর্তমানে যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ক সার্কেল ও খ সার্কেলে যারা দায়িত্ব পালন করছেন তাদেরকে যশোর শহরে মাদক বিক্রেতা ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকজন চেনেন। প্রতিমাসে বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক, ঔষধের দোকান, হার্ডওয়ার ও হোমিও প্যাথি দোকানগুলো হতে লাখ লাখ টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেন দুই সার্কেলের কর্মকর্তা ও সদস্যরা।

সূত্রগুলো আরো জানান, প্যাথেডিন,মরফিন বিক্রির ক্ষেত্রে প্রতিবছর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ক সার্কেল ও খ সার্কেল এলাকার বাসিন্দা তাদের অনুমতিপত্র নবায়ন করতে এসে এই দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা ও সদস্যকে লাইসেন্স প্রতি নূন্যতম ২ হাজার টাকা থেকে তারও অধিক টাকা দিতে হয়। এক কথায় খুশি না করলে তাদের নবায়নের ক্ষেত্রে নানা হয়রানীর শিকার হতে হয়। এব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হলে ওই দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত