জাল সনদ দিয়ে চাকরি ও সরকারি টাকা আত্মসাতের দায়ে নড়াইল কালিয়ার যোগানিয়া ডিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক এসএম জাকির হোসেনকে নয় বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। রোববার স্পেশাল জজ ( জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত এসএম জাকির হোসেন গোপালগঞ্জের মকসুদপুর থানার উত্তর ধীরাইল গ্রামের মৃত মোশারফ হোসেনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফুল আলম বিপ্লব। সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধান শিক্ষক এসএম জাকির হোসেন পলাতক রয়েছে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, এসএম জাকির হোসেন ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার আখাউড়া কর্মমঠ উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি করতেন। তার বিএসসি (সম্মান) এমএসসি (গণিত) দুইটির সনদ জাল বলে মনে হওয়ায় ম্যানেজিং কমিটি যাচাই বাছাইয়ের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ সনদ দুইটি জাল বলে বিদ্যালয় কর্তপক্ষকে জানিয়ে দেন। এরমধ্যে জাকির হোসেন চাকরি ছেড়ে পালিয়ে যায়। জাকির হোসেন এরপর শিক্ষাবর্ষ পরিবর্তন করে হুবহু দুইটি সনদ তৈরী করেন এবং ডিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তার শিক্ষা সদন দুইটি জাল সন্দেহে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যাচাই বাছাইয়ের জন্য ২০১৪ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান। ৪ আগস্ট বিশ্ব বিদ্যালয় কতৃপক্ষ সনদ জাল জানিয়ে দেন। এ ছাড়াও তার পূর্বের কর্মস্থলে খোঁজ নিয়ে সনদ জালিয়ারির বিষয়টি ধরা পড়ে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের পতিষ্ঠাতা সদস্য যোগানিয়া গ্রামের আমীর আলী বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন আইনে ওই বছরের ২৪ আগস্ট প্রধান শিক্ষককে আসামি করে নড়াগাতী থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎকালিন সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী সনদ জালিয়াতি অভিযোগ পাওয়ায় আসামি প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনকে অভিযুক্ত করে ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি নড়াইল আদালতে চার্জশিট জমা দেন। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য যশোর স্পেশাল জজ আদালতে বদলী করা হয়। দীর্ঘ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি এসএম জাকির হোসেনর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচরক ৪৬৮ ধারায় সাত বছর সশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমান অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ৪৭১ ধারায় দুই বছর সশ্রম কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন।
রাতদিন সংবাদ