আফজাল হোসেন চাঁদ : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়াতে ফায়সাল ডিজিটাল এক্স-রে এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে বিরুদ্ধে একের পর এক ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে । প্রতিনিয়ত অসহায় রোগীদের বিভিন্ন ধরণের আশ্বাস দিয়ে পকেট কাটছেন মালিকপক্ষ। দুরথেকে আসা রোগীরা মুখবুঝে তা সহ্য করছে নিরবে। অথচ বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের তরফথেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। যা নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাঁকড়া বাজারের পাঁচ রাস্তার মোড়ের ব্রীজ রোডে মোড়ল সুপার মার্কেটের নীচ তলায় এই চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের মালিক হাড় ভাঙ্গা, হাড় জোড়া, বাত রোগ ও শিরা রোগে অভিজ্ঞ ডিএমএফ (খুলনা), আরসিও (ঢাকা) ডাঃ এস.এম সামছুর রহমান। তার অর্জিত ডিগ্রী ও চিকিৎসার উপর ভিত্তি করে স্থানীয় সচেতন মহল জেলা সিভিল সার্জন’র প্রতি তার কাগজপত্র পরিক্ষা করে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের তথ্য অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, বাঁকড়া আলীপুর গ্রামের রমজান আলীর স্ত্রী নাজমা খাতুন বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সকালে বাঁকড়া বাজার হতে ছেলে সাকিবুর হাসান (৬) এর জন্য গ্যাসের ঔষধ কিনে ইজিবাইকে বাড়ির সামনে নেমে গাড়ি ভাড়া দেওয়ার সময় ছেলে দৌড়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি ট্রলি এসে তার ছেলেকে আঘাত করে। ছেলে ঘটনাস্হলেই অজ্ঞান হয়ে গেলে ছেলেকে নিয়ে বাঁকড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিয়ে উপরে ওঠার সময় সিড়ির সাইটে থাকা ফায়সাল ডিজিটাল এক্স-রে এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে থাকা লোকজন বলে এইটাই ডাক্তার খানা। এই বলে তার ছেলেকে নিয়ে অনেক সময় পার করে তাদের দেওয়া ব্যবস্থা পত্রে উল্লেখ করেন প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হল, যশোর সদরে ভর্তি করবেন বলে ছেড়ে দেয়। পরে অন্য এক হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তার দেখানোর পর বর্তমানে তার ছেলে সুস্থ আছে। সম্প্রতি ৭এপ্রিল বাঁকড়া বাজারে হালিমার হোটেল কর্মচারী রাব্বী (১৮) হাতের শিরা কেটে গেলে ফায়সাল ডিজিটাল এক্স-রে এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে গেলে বিভিন্ন পরিক্ষা করে তাদের নিকট থেকে অধিক টাকা নিয়ে শিরা ঠিক না করে উপরের চামড়া টেনে সেলাই করে দেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে জ্বালা যন্ত্রনা হলে অন্য ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে এখন মোটামুটি সুস্থ। গত বছর ২৫ আগষ্ট বাঁকড়া উজ্জ্বলপুর গ্রামের শামসুর রহমান রানা পড়ে গিয়ে হাতের কব্জিতে সামান্য আঘাত পায়। তারপর চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ফায়সাল ডিজিটাল এক্স-রে এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে গেলে সেখান থেকে বিভিন্ন টেস্ট ও এক্স-রে করে হাতে প্লাষ্টার ব্যান্ডেজ করে দেন। পরবর্তীতে হাতের ব্যথা কম না হলে অন্য ডাক্তারের নিকট গিয়ে এক্সে-রে করে দেখেন হাতে কিছু হয়নি। সেই চিকিৎসকের লেখা ঔষধ খেয়ে ভাল হন। ফায়সাল ডিজিটাল এক্স-রে এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিক ডাঃ এস.এম সামছুর রহমান বলেন, আমার লাইন্সেস আছে। আমি নিয়মকানুন মেনে রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে থাকি। আমার এখানে সহকারী হিসাবে একটা ছেলে ছিলো আব্দুল কাদের নামে। তার কোন কাগজপত্র নেই। সে এখন বাঁকড়া বাজারের চেম্বার খুলে বসে আছে। সিভিল সার্জন আসলে চেম্বার বন্ধ করে থুয়ে দেয়। আমি তো ভাই কারও পিছনে লাগিনে। যার যা ভালো লাগে সে তাই করুক। জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ আবু শাহিন বলেন, ঘটনার বিষয়টা আগে শুনতে পায়নি। এখন যেহেতু বিষয়টা জানতে পারলাম, সেহেতু উক্ত বিষয়টা ও স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী অনুয়ায়ী তার প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র গুলো ঠিক আছে কিনা সেটা আমি দেখবো এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
- Advertisement -