চোখে–মুখে আতঙ্কের ছাপ নিয়ে ছেলের নির্যাতনের কথা বলছিলেন অসহায় বৃদ্ধা মা করফুলের নেছা। নিজ ছেলে নাছির আহম্মদ ও তার সন্তানরা তাকে মারধর করে বের করে দিয়েছে বাড়ি থেকে।প্রতিনিয়ত অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মা’কে। এই অমানবিক নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষার জন্য আকুতি জানিয়েছেন ফেনীর দাগনভূঁইয়া উপজেলার সিন্দরপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের ৮০ বছরের এ বৃদ্ধা মা। তার চার সন্তানের বিরুদ্ধে গত ৩০শে জুলাই স্থানীয় দাগনভূঁইয়া থানায় এবং ০৬ সেপ্টেম্বর ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন তিনি।স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ আত্মীয়-স্বজন পর্যায়ে দফায় দফায় শালিস-বৈঠক হওয়ার পরও গ্রাম্য রাজনীতি রোষাণলে বিষয়টি নিষ্পত্তি হচ্ছে না। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধটি না মিটলে এক সময় তা চরম আকার ধারণ করতে পারে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।এদিকে ওই বৃদ্ধা মা লিখিত অভিযোগে তাঁর চার সন্তানের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন ও মেরে ফেলার হুমকির অভিযোগ করেছেন। অপরদিকে বৃদ্ধার সন্তান নাছির আহম্মদ নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে বলেছেন, এটি সত্য নয়।অভিযোগে বলা হয়- ফেনীর দাগনভূঁইয়া উপজেলার সিন্দরপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের করফুলের নেছা। ৮ পুত্র ও তিন কন্যা তাঁর। স্বামী মৃত্যুবরণ করেন ২০০১ সালে। মৃত্যুকালে স্বামী রেখে যান বিপুল সম্পদ। এই সম্পত্তিই এখন কাল হয়েছে। সন্তানদের মধ্যে চলছে সম্পত্তি নিয়ে চলছে চরম বিরোধ। দুইপক্ষই অনেকগুলো মামলা করেও ক্ষ্যাš হয়নি। এখন সে বাড়িতে চলছে সন্ত্রাসী মহড়া।বৃদ্ধা মা করফুলের নেছ জানান, তাঁর ছেলে নাছির আহম্মদ, কবির আহম্মদ, জাফর আহম্ম, ফয়েজ আহম্মদ স্বামী মৃত্যুর পর কোন খোর-পোষ বা ঔষদ-পথ্য দিচ্ছে না। তার নামের উক্ত ছেলেদের নামে লিখে দেয়ার জন্য তাঁকে প্রতিনিয়ত শারীরিক নির্যাতন ও নানাবিদ অত্যাচার করে আসছে। এমনকি জোরপূর্বক তাঁকে বসত ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন। মা চার ছেলের অত্যাচারে ফেনী শহরে অন্য ছেলে সুলতান আহমদের বাসায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন তিনি।বৃদ্ধার মেয়ে আকলিমা আক্তার (কাঞ্চু) বলেন, “আমাকে পাশের বাড়িতে বিয়ে দেয়া হয়েছে। ভাইরা আমার মাকে খুব অথ্যাচার করে। আমি রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে আমাকেও মার-ধর করে। তাদের হুমকীতে আমি স্বামী সন্তানসহ বাড়ি ছাড়া।প্রতিবেশীরা জানান, বৃদ্ধার সন্তানরা যার যেমন ইচ্ছা তেমনভাবে সম্পতি দখলের উৎসবে মেতে উঠেছে। তারা স্থানীয় শাল্লিশধার বা জনপ্রতিধিদের বিচার বা সমঝোতার প্রস্তাব আমলে নিচ্ছেনা।আমি মরে যাচ্ছি বললে আমার ছেলে তবুও আমাকে মারতে থাক এবং বলতে থাকে তুই মরে যা। আমাকে কুকুরের মতো টেনেহেচড়ে মেরেছে আমার ছেলে।”এসব বিষয়ে বৃদ্ধার সন্তান নাছির আহমদ বলেন, মাকে কিছু লোক যা শিখিয়ে দিয়েছে তিনি তা বলেছেন। আমার মাকে নিয়ে কিছু লোক মিথ্যা রাজনিতি করছে।এ ব্যাপারে স্থানীয় সিন্দুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর নবী বলেন, তারা যদি আমার কাছে আসতো আমি ব্যাপারটি সমাধানের চেষ্টা করতাম। এখনো যদি তারা উভয় পক্ষ আমার কাছে আসে আমি সমাধানের চেষ্টা করবো।
অনলাইন ডেস্ক







