যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামের সিজাজুল হকের ছেলে সোহেল খান। দীর্ঘ দশ বছর ঢাকায় বসবাস করার পর প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে এসে নিজ বসতবাড়ি প্রাঙ্গনে ‘প্রোটিন প্লাস’ নামে একটি ছাগলের ফার্ম তৈরি করেছেন তিনি। যেখানে শুধুমাত্র তার নিজের কর্মসংস্থান নয় বরং এলাকার আরো দশটি পরিবারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন তিনি।
সোহেল খান চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে নিজ বসতবাড়ির চার একর জমির উপর পরিকল্পিত ভাবে তৈরি করেন একটি আদর্শ ছাগলের খামার। প্রথমে ৪০ টি দেশী-বিদেশী ছাগল দিয়েই শুরু করেন ছাগল পালন। বর্তমানে তার এ খামারে প্রায় শতাধিক ছাগল রয়েছে। খামারে ছাগলগুলোকে খাবার দেওয়া, গোসল করানো, খামার পরিস্কার করা, ঘাস কাটার জন্য নিয়োজিত রয়েছেন একই গ্রামের দশজন কর্মচারী। ঘাস কাটার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্র, গরমে শীতল পরিবেশ তৈরি করার জন্য রয়েছে এয়ার কুলার ফ্যান, রয়েছে বিদুৎ ও বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিস্কাশনের সু-ব্যাবস্থা।
খামারের কর্মচারী বাবুল বলেন, খামারের সত্তাধিকারী সোহেল খানের সার্বিক দিকনির্দেশনায় সর্বোক্ষন খামারের প্রতি নজর রাখেন তারা। খামারে ছাগলদের খাবারের তালিকায় রয়েছে ভুষি, সবুজ টাটকা ঘাস, খৈল, ভাতের মাড় ইত্যাদি।
প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে এমন বানিজ্যিক খামার গড়ে তোলাতে যেমন একাধিক বেকার পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে তেমনি এ লাভজনল ছাগল পালন পেশাটি নজর কেড়েছে এলাকার বেকার যুবকদের। ফলে এমন উদ্যেগকে সাবলম্বি হওয়ায় আরেকটি বিকল্প রাস্তা মনে করছে স্থানীয় গ্রামবাসীরা।
আসলাম হোসেন নামে, এক প্রতিবেশী বলেন, আমি বিদেশ যেতে চেয়েছিলাম। একবার গিয়ে প্রতারিত হয়ে ফিরে এসেছি। এখন সোহেল খানের খামার করা দেখে আমারও আগ্রহ জেগেছে। আমিও খামার করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
সোহেল খানের খামারের প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী পশু চিকিৎসক গোলাম মোস্তফা বলেন, ছাগলের সাধারণত গটফক্স,ভাইরাসজনিত যেসকল রোগবালাই হয় তার কোনটিই এখন পর্যন্ত এ খামারে দেখা দেয়নি। খামার অত্যান্ত পয়পরিস্কার এবং আলো বাতাসমুক্ত জায়গায় হওয়ায় স্বাস্থ্যসম্মতভাবেই বেড়ে উঠছে খামারের ছাগলগুলো।
প্রোটিন প্লাস খামারের সত্তাধিকারী সোহেল খান জানান, দীর্ঘ প্রতিকুলতা পেরিয়ে প্রত্যান্ত অঞ্চলে এ ছাগলের খামার তৈরি করে তিনি নিজে আজ সাবলম্বি হবার পাশাপাশি আরও দশটি পরিবারকে সাবলম্বি করে তুলেছে। ফলে তার দেখাদেখি বেকার যুবকদের চাকুরী আসায় ছোটাছুটি না করে দেশের কল্যানে এমন আত্মকর্মসংস্থান তৈরি করার আহবান জানান তিনি।
এ খামারে প্রতি বছর প্রায় ৫০০ ছাগল উৎপাদন করে বাজারে সরবরাহ করে আমিষের চাহিদা মেটানোর লক্ষমাত্রা গ্রহন করেছেন সোহেল খান। পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আত্মকর্মসংস্থান ও বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে এগিয়ে আসার আহবান সকলের।
এএন-৭