Saturday, December 6, 2025

ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল

সুজন হোসেন, কালীগঞ্জ ( ঝিনাইদহ) প্রতিনিধিঃ সংঘর্ষের ঘটনায় ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আব্দুল খালেকের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) ইসি সচিবালয়ের উপসচিব (নির্বাচন প্রশাসন) মোঃ মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রাজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন কমিশন ঘােষিত সময় সূচী অনুসারে আগামী ১৫ জুন ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা মেয়র পদে একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ আব্দুল খালেক ও তার সমর্থক কর্তৃক মিছিল-শোভাযাত্রা করে গত১৮ মে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ কাইয়ুম শাহরিযার জাহেদীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটে, যা ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। মোঃ আব্দুল খালেক অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ কাইযুম শাহরিয়ার জাহেদীর প্রচারাভিযানে বাধা প্রদান করেছেন। তার বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাখ্যা চাওয়ায পর তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে নির্বাচন আচরণ বিধিমালা মেনে চলবেন বলে অঙ্গীকার করেন।’
‘এ ছাড়া একজন নির্বাচন কমিশনার গত ২৯ মে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে উপস্থিত থেকে সব প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণ মেনে চলার বিষয়ে মৌখিক অঙ্গীকার গ্রহন করেন। তারপরও মোঃ আব্দুল খালেকের সমর্থকরা ১ জুন অপর প্রার্থী মোঃ কাইযুম শাহরিয়ার জাহেদী ও তার সমর্থকদের আক্রমণ করে আহত করেন, যা বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওতে প্রকাশ পায়’
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘উল্লেখিত কার্যক্রম পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৫ এর লঙ্ঘন একাধিকবার হয়েছে এবং উল্লিখিত ঘটনাগুলো তদন্তের মাধ্যমে প্রমানীত হয়েছে ।  প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাার্থী হিসেবে পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেছেন। পৌরসভা নির্বাচন আচরণ বিধিমালা, ২০১৫ এর বিধি ৩২ অনুসারে নির্বাচন কমিশন ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচনের মেয়র পদে প্রতিদনন্দী প্রার্থী মোঃ আব্দুল খালেকের প্রার্থিতা বাতিল করলেন।’
উল্লেখ্য, গত ১ জুন রাত সাড়ে ৭টার দিকে জেলা শহরের ধুপাঘাটা নতুন ব্রীজ এলাকায় ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সর্মথকদের মধ্যে ধাওয়াপালটা-ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর গাড়িও ভাংচুর করা হয়েছে। এতে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহিদী হিজল ও তার বড় ভাই পিপুলসহ অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও তার বড় ভাইসহ তিনজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর জেলা শহরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে। হামলার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান চালানো হয়। মেয়র প্রার্থী হিজল অভিযোগ করেন, পৌর এলাকার উদয়পুর গ্রামে জনসংযোগ করে গোবিন্দপুর এলাকায় আসা মাত্র আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আব্দুল খালেকের সর্মথকরা হঠাৎ করে হামলা শুরু করে।
এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ বেধড়ক মারধর করা হয় তাদের। একপর্যায়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করলে গুরুতর আহত হন তিনি। একই সময় তার বড় ভাই পিপুলকেও পিটিয়ে আহত করে হামলাকারীরা।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সর্মথকদের হামলায় আরও অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। নির্বাচনে পরাজয় ঠেকাতে এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটনানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সংঘর্ষের একপর্যায়ে নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণের কথা স্বীকার করেন মেয়র প্রার্থী হিজল।
উল্লেখ্য, ১৫ জুন ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন। এ নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী চারজন। নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মেঃ আব্দুল খালেক, স্বতন্ত্র কাইয়ুৃম শাহারিয়ার জাহিদী হিজল, মিজানুর রহমান মাসুম এবং ইসলামী অন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
আর কে- ০২
আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর