Friday, December 5, 2025

দেশের চারদিকে ৫টি ভূমিকম্প উৎস—ঝুঁকিতে কোন কোন এলাকা?

নরসিংদীর মাধবদীতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইলে ভূকম্পন রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র। আজ সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে নরসিংদীর পলাশ এলাকায় মৃদু কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩.৩।

ভূমিকম্প গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবায়েত কবির জানান, শুক্রবারের ভূমিকম্পেরই আফটারশক হিসেবে আজকের এই কম্পন দেখা দিয়েছে।

দেশের ভূমিকম্প ঝুঁকি বিবেচনায় বাংলাদেশকে তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে—জোন-১ উচ্চঝুঁকি, জোন-২ মাঝারি ঝুঁকি ও জোন-৩ নিম্নঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রকাশিত মানচিত্র অনুযায়ী, দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলা জোন-১ এ পড়ে, যেগুলোকে সর্বোচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ ধরা হয়। সাধারণত ফল্ট লাইন বা প্লেট বাউন্ডারির আশপাশের অঞ্চলগুলোকেই এ উচ্চঝুঁকির মধ্যে ধরা হয়।

বিশেষ করে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের নয়টি জেলা, ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল, গাজীপুর, নরসিংদীর কিছু অংশ, পুরো কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং পার্বত্য অঞ্চলের খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির বহু এলাকা ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। অন্যদিকে খুলনা, যশোর, বরিশাল ও পটুয়াখালী জোন-৩ এর আওতায়, যেখানে ঝুঁকি তুলনামূলক সর্বনিম্ন।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯৭৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দেশে অন্তত পাঁচবার বড় ধরনের ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে, যেগুলোর উৎস ছিল প্রধানত সিলেট, মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার অঞ্চল। ফলে ভবিষ্যতেও এসব এলাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি বহাল রয়েছে। পাশাপাশি ভারতের আসাম ও মেঘালয় সীমান্তঘেঁষা সিলেট–ময়মনসিংহ অঞ্চলকেও উচ্চঝুঁকির এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বাংলাদেশের চারপাশে পাঁচটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত আছে। এর মধ্যে প্লেট বাউন্ডারি-১ মিয়ানমার থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত বিস্তৃত। প্লেট বাউন্ডারি-২ নোয়াখালী থেকে সিলেট এবং প্লেট বাউন্ডারি-৩ সিলেট থেকে ভারতের দিকে গেছে। এছাড়া ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট অঞ্চলে ডাউকি ফল্ট এবং মধুপুর ফল্টও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকম্প উৎপত্তিস্থল হিসেবে পরিচিত।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর