এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা ঘুচাল বাংলাদেশ ফুটবল দল। ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে জমজমাট লড়াইয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ১–০ গোলে হারিয়ে বহু দিনের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটাল লাল–সবুজেরা। চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরা মিডফিল্ডার শেখ মোরসালিনই হয়ে উঠলেন জয়ের একমাত্র নায়ক।
ম্যাচের শুরুতে ভারত আক্রমণে এগিয়ে থাকলেও গোলের মুখ খুলতে পারেনি। কয়েক দফা ডি–বক্সে ঢুকেও বাংলাদেশের রক্ষণ ভাঙতে ব্যর্থ হয় তারা। অন্যদিকে কিছুটা সময় নিয়ে ছন্দে ফেরে বাংলাদেশ। ১১ মিনিটে আসে স্বস্তির মুহূর্ত—বাম দিক থেকে রাকিবের দারুণ ক্রসে পা লাগিয়ে জালে ঠেলে দেন তরুণ মোরসালিন। সেই গোলে স্টেডিয়ামজুড়ে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে।
২০ মিনিটে গোলরক্ষক মিতুল মারমার ভুলে বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ। তবে রক্ষণভাগে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে রক্ষা করেন হামজা চৌধুরী। ভারতীয় এক ফুটবলারের বিপজ্জনক ক্রস তিনি মাথা দিয়ে ক্লিয়ার করেন।
৩৪ মিনিটে ম্যাচে উত্তেজনার জোয়ার। তপু বর্মণ ও ভারতের বিক্রমের ধাক্কাধাক্কিতে পরিস্থিতি একসময় হাতাহাতির মুখে গড়ায়। রেফারি দুজনকেই হলুদ কার্ড দেখিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
প্রথমার্ধের বাকি সময়ে দুপক্ষই কয়েকটি সুযোগ পেলেও আর গোল হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে ভারত নতুন উদ্যমে মাঠে নামে এবং দুইবার পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করলেও লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হয়। বাংলাদেশও রক্ষণ সামলে পাল্টা আক্রমণে চেষ্টা চালাতে থাকে। ৭৮ মিনিটে তপুর নেওয়া দূরপাল্লার শট ভারতের গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দেন।
৮৩ মিনিটে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা ভারতের এক ডিফেন্ডারের হ্যান্ডবলের দাবি তুললেও রেফারি পেনাল্টি না দিয়ে খেলা চালিয়ে যেতে নির্দেশ দেন।
গ্যালারিতে বসে বাংলাদেশকে সমর্থন দেন অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তাদের উপস্থিতিতে আরও উজ্জীবিত হয় লাল–সবুজের ফুটবলাররা।
২০০৩ সালের পর কোনো স্বীকৃত ম্যাচে ভারতকে হারাতে না পারা বাংলাদেশ এবার সেই খরা ভেঙে নতুন ইতিহাস রচনা করল এশিয়ান কাপের মঞ্চে।







