যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কাউরিয়া আউলিয়াপাড়ায় একটি হাঁসের খামারে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, ওয়াকিটকি, খেলনা পিস্তলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে জেলা পুলিশ। একই সঙ্গে অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করেন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আবুল বাশার। অভিযানে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও ঝিকরগাছা থানা পুলিশের বিশেষ টিম অংশ নেয়।
অভিযান শেষে পুলিশ জানায়, খামারটিতে অভিযান চালিয়ে হাসুয়া, রামদা, দা, কুড়াল, চাইনিজ কুড়াল, ওয়াকিটকি, খেলনা পিস্তল, রেঞ্চ, করাত, যৌনতা-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরঞ্জাম, মদের বোতল, ওজন মাপার স্কেল, সিসি ক্যামেরা ও পুলিশের ব্যবহৃত পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের ধারণা, হাঁসের খামার ও মাছের ঘেরের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হচ্ছিল একটি অপরাধী সিন্ডিকেট। এই চক্রটি দেহব্যবসা, পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চক্রের মূল হোতা ও খামার মালিক সোহাগ পালিয়ে যান।
আটক তিনজন হলেন—কাউরিয়া মুন্সিপাড়ার মৃত হাবিবুল্লাহ দেওয়ানের ছেলে মাহবুবুর রহমান, পারবাজার গ্রামের মৃত আশিকুল ইসলাম বাবুর ছেলে জাসিবুল ইসলাম হাসিব এবং মণিরামপুর উপজেলার ঝাপা পশ্চিমপাড়ার মমিনুর রহমানের ছেলে ইউনুস আলী।
স্থানীয়রা জানান, ওই হাঁসের ফার্ম ও মাছের ঘেরটি অনেকদিন ধরেই সন্দেহজনক কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। রাত হলেই সেখানে অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা বেড়ে যেত। বাঁশঝাড়ের আড়ালে তৈরি টঙঘরগুলো ছিল অপরাধীদের নিয়মিত আড্ডাখানা। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চক্রটি এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আবুল বাশার বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও সরঞ্জামসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায় দীর্ঘদিন ধরে জড়িত থাকতে পারে।”
তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত ফার্ম মালিক সোহাগের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। তাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। ঘটনায় ঝিকরগাছা থানায় নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
অভিযানে অংশ নেন ডিবির এসআই আবু হাসান, এসআই অলোক কুমার দে এবং ঝিকরগাছা থানা পুলিশ ও ডিবির বিশেষ টিমের সদস্যরা।
সাকিব হাসান







