Friday, December 5, 2025

গ্রেটা থুনবার্গসহ কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা নিয়ে যাওয়া ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ থেকে আটক হওয়া আন্তর্জাতিক অধিকারকর্মীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠেছে ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে। মুক্ত হয়ে ফেরার পর বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী এ অভিযোগ করেছেন। তাঁদের ভাষ্যমতে, সুইডিশ অধিকারকর্মী ও পরিবেশ আন্দোলনের প্রতীক গ্রেটা থুনবার্গকেও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার আটককৃত ১৩৭ জন কর্মীকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ৩৬ জন তুরস্কের নাগরিক এবং বাকিরা যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, মালয়েশিয়া, কুয়েত, সুইজারল্যান্ড, তিউনিসিয়া, লিবিয়া ও জর্ডানসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক।

তুর্কি সাংবাদিক এরসিন সেলিক দাবি করেন, তিনি নিজ চোখে দেখেছেন গ্রেটা থুনবার্গকে ইসরায়েলি বাহিনী মাটিতে ফেলে টেনে নিয়ে গেছে এবং জোর করে ইসরায়েলি পতাকায় মুড়িয়ে দিয়েছে। অনুরূপ বর্ণনা দিয়েছেন মালয়েশিয়ার অধিকারকর্মী হাজওয়ানি হেলমি ও যুক্তরাষ্ট্রের উইন্ডফিল্ড বিবার। তাঁদের অভিযোগ, থুনবার্গকে অপমানজনকভাবে ধাক্কা দিয়ে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যেখানে ইসরায়েলের উগ্রপন্থী নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির উপস্থিত ছিলেন।

আটক অবস্থায় খাবার, সুপেয় পানি ও ওষুধ না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই। হাজওয়ানি হেলমি বলেন, “আমাদের পশুর মতো আচরণ করা হয়েছে। তিন দিন খাবার পাইনি, টয়লেটের পানি খেতে হয়েছে।”

তুরস্কের টেলিভিশন উপস্থাপক ইকবাল গুরপিনার জানান, প্রচণ্ড গরমে তাঁদের কক্ষে বন্দি রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমরা বুঝতে পেরেছি, গাজাবাসীরা আসলে কী ধরনের দুর্দশার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন।”

ইতালির সাংবাদিক লরেঞ্জো আগোস্তিনোও থুনবার্গের অপমানের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, “মাত্র ২২ বছর বয়সী এই সাহসী নারীকে ট্রফির মতো প্রদর্শন করা হয়েছে।”

তুরস্কের আরেক অধিকারকর্মী আয়চিন কানতুগলু জানান, বন্দিশালায় রক্তমাখা দেয়ালে আগের বন্দিদের লেখা পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, “মায়েরা সন্তানের নাম লিখে গেছেন। আমরা তখনই উপলব্ধি করেছি, ফিলিস্তিনিরা কত ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।”

তুরস্ক ও ইতালিসহ বিভিন্ন দেশের সরকার আটক কর্মীদের ফেরত আনার ব্যবস্থা করেছে। তবে এখনও বেশ কয়েকজন কর্মী ইসরায়েলে বন্দি আছেন। ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁদের ২৬ জন নাগরিক ফিরেছেন, তবে ১৫ জন এখনো আটক রয়েছেন।

এদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব অভিযোগকে “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর