নেপালের সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের প্রভাব পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার এখন নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকিতে রয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছেন মমতা।
পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি জেলার ‘চিকেন’স নেক’ এলাকায় নেপালের সঙ্গে ভারতের প্রায় ১০০ কিলোমিটার স্থলসীমান্ত রয়েছে। এ অঞ্চল দিয়েই অনুপ্রবেশের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গ সফরে আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কলকাতায় পৌঁছে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে মমতা সাংবাদিকদের বলেন, এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইস্যু। জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুতে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের কোনো দ্বন্দ্ব নেই; আমরা এক।
উল্লেখ্য, সরকারের দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ৯ সেপ্টেম্বর নেপালে শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্ম (জেন জি) বিক্ষোভ শুরু করে। মাত্র দু’দিনের আন্দোলনের মধ্যেই ১১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা অলির সরকারের পতন ঘটে এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরদিন সাবেক বিচারপতি সুশীলা কার্কি অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হন। তবে দেশটির পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি।
ফলে শিলিগুড়ি সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের পাশাপাশি নকশালপন্থি মাওবাদী রাজনীতির প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কাও রয়েছে। নেপালে বিভিন্ন নকশালপন্থি মাওবাদী দল সক্রিয় এবং সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানেও তাদের প্রভাব ছিল।
মোদির সঙ্গে মমতার বৈঠকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শিলিগুড়ির ভারত-নেপাল সীমান্তে নিয়মিত বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর পাশাপাশি আধাসামরিক বাহিনী সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) মোতায়েন করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্যের ব্যাপক আদান-প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।
উল্লেখযোগ্য যে, পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি। সীমান্তবর্তী এই রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপি প্রভাব বাড়াতে চাইছে, কিন্তু তৃণমূল সেই পথে প্রধান বাধা হিসেবে কাজ করছে।
অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০২