Friday, December 5, 2025

মালয়েশিয়ায় অভিবাসন-বিরোধী অভিযানে ৪০০ বাংলাদেশি আটক

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায় অভিবাসন-বিরোধী বড়সড় অভিযান চালানো হয়েছে। দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরে রাতের আঁধারে চালানো এই অভিযানে ৭৭০ জন অনিবন্ধিত অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ।

আটককৃতদের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন বাংলাদেশি। এছাড়া দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নাগরিকও রয়েছেন। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) নিউ স্ট্রেইট টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি জানায়, রাজধানীর বুকিত বিনতাং এলাকায় রাতের বেলায় চালানো অভিযানে শত শত অভিবাসী টেবিলের নিচে লুকিয়ে, দোকানের ভেতরে আশ্রয় নিয়ে কিংবা ছাদে উঠে পালানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েন। “অপস বেলাঞ্জা” নামে পরিচিত এ অভিযানের সময় মাত্র দুই ঘণ্টায় বুকিত বিনতাং পরিণত হয় লকডাউন জোনে। তিন ব্লকের প্রতিটি প্রবেশ ও প্রস্থানপথ অবরুদ্ধ করে কর্মকর্তারা নথি পরীক্ষা চালান এবং লুকিয়ে থাকা অভিবাসীদের বের করে আনেন।

স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হওয়া এ অভিযানে পুত্রজায়া থেকে আসা অভিবাসন বিভাগের ১০৬ জন কর্মকর্তা অংশ নেন। নেতৃত্ব দেন অভিবাসন বিভাগের পরিচালক বাসরি ওসমান। তিনি জানান, মোট ২ হাজার ৪৪৫ জনকে তল্লাশি করা হয়— এর মধ্যে ১ হাজার ৬০০ জন বিদেশি এবং ৮৪৫ জন স্থানীয়।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশি রয়েছেন ৩৯৬ জন— এর মধ্যে ৩৯৪ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। এছাড়া মিয়ানমারের ২৩৫ জন পুরুষ, নেপালের ৭২ জন, ভারতের ৫৮ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১৭ জন পুরুষ ও ২ জন নারী এবং আরও ৯ জন বিভিন্ন দেশের নাগরিক।

বাসরি ওসমান বলেন, অনিবন্ধিত অভিবাসীদের আটক হওয়ার প্রধান কারণ হলো মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসা, বৈধ পরিচয়পত্র না থাকা এবং অনুমতি ছাড়া কাজ করা। মূলত দারিদ্র্য ও বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেতে এসব অভিবাসীরা সাধারণত মালয়েশিয়ায় নির্মাণকাজ, বাগান বা ঝুঁকিপূর্ণ খাতে কাজ করতে আসেন, যেসব কাজে স্থানীয়রা অনীহা প্রকাশ করে।

তিনি আরও জানান, বুকিত বিনতাং অনেকদিন ধরেই অনিবন্ধিত অভিবাসীদের হটস্পট। নাইটলাইফ ও শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থানের কারণে এটি অভিবাসীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। তিন সপ্তাহের পর্যবেক্ষণের পর অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানে একটি গোপন জুয়ার আসরও ধরা পড়ে, যেখানে অনলাইন জুয়া খেলছিল সাত-আটজন বিদেশি। তাদেরও আটক করা হয়। এছাড়া কিছু দোকানপাটও বিদেশিদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছিল বলে জানায় অভিবাসন বিভাগ।

আটককৃতদের প্রাথমিক যাচাইয়ের জন্য পুত্রজায়ার অভিবাসন দপ্তরে নেওয়া হবে, এরপর তাদের আটককেন্দ্রে পাঠানো হবে। বাসরি ওসমান বলেন, এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও নজরদারি বাড়ানো হবে, যাতে মালিকরা অনুমোদিত কোটার বাইরে বিদেশি কর্মী নিয়োগ না দেন।

অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০১

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর