Friday, December 5, 2025

যশোরে ধনী-গরিব দ্বন্দ্বের বলি টিকটকার মাহী

যশোরের আলোচিত টিকটকার ইয়াসমিন আক্তার মাহী (২১) প্রেমঘটিত জটিলতায় মানসিক চাপে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২২ জুলাই) রাত সোয়া ১টার দিকে শহরের ধর্মতলা এলাকার ভাড়া ফ্ল্যাটে তিনি গলায় ফাঁস দেন। মৃত্যুর আগে টিকটকে পোস্ট করেন— “ভালোবাসা বলতে কিছুই হয় না”

মাহীর বাড়ি শার্শা উপজেলার বেনাপোলের সাদিপুর গ্রামে। দিনমজুর বাবার মেয়ে মাহী টিকটক ও ফেসবুকে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। প্রায় দেড় বছর আগে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে শার্শার পুটখালী এলাকার ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে সাকিবুল হাসান বিশালের (২৪) সঙ্গে, যিনি আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী ‘গোল্ড নাসির’-এর ভাতিজা। বিশালের বাবা অলিয়ার রহমান ও মা সোমা খাতুন স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী।

প্রেমের সম্পর্ক জানাজানি হলে বিশালের পরিবারের পক্ষ থেকে মাহীকে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকি দেওয়া হয়। মাহীর বড় ভাইকে মারধরও করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, ১৫-১৯ জুলাই পর্যন্ত বিশাল ফ্ল্যাটে থাকলেও পরে পরিবারের চাপে দূরে সরে যান। ২০ জুলাই বিশালের পরিবারের করা অভিযোগে মাহীর মানসিক চাপ বেড়ে যায়।

২২ জুলাই রাতে আত্মহত্যার আগে মাহী প্রেমিককে ভিডিও কলে নিজের হতাশা ও অপমানের কথা জানান। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে পরিবারের দাবি। তারা অভিযোগ করেছেন, এটি একক আত্মহত্যা নয়—পরিকল্পিত মানসিক নির্যাতনের ফল।

কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত জানান, ময়নাতদন্তের পর তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মৃত্যুর প্ররোচনার অভিযোগে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে।

মাহীর মৃত্যু সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই একে সামাজিক বৈষম্য ও শ্রেণি-নিপীড়নের উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। শেষ ভিডিওটি অনলাইনে ভাইরাল হয়ে প্রশ্ন তুলছে—এই মৃত্যুর জন্য দায়ী কে?

অভিযুক্ত বিশালের বাবা অলিয়ার রহমান দাবি করেছেন, “আমার ছেলে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। সে এখনও ক্লাস নাইনে পড়ে।” তবে বিশালের ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর